সাকলায়েনের জন্য খারাপ লাগছে, সে ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার: পরীমণি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৪, ২১:৪৩

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. গোলাম সাকলায়েন ও পরীমণি। ছবি: সংগৃহীত
পরীমণিকাণ্ডে চাকরি হারাতে চলেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার ও বর্তমানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. গোলাম সাকলায়েন। বলা হচ্ছে, পরীমণির সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়ানোর কারণেই বিপদের মুখে তিনি। বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন পরীমণি।
আজ বিকেলে গণমাধ্যমকে পরীমণি বলেন, ‘কেবল সম্পর্কে কারণে চাকরি যাবে তা হতে পারে না। সাকলায়েনের জন্য খারাপ লাগছে, সে ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার! তাকে সরানোর জন্য আমাকে জড়িয়ে অদ্ভুত কিছু কারণ দাঁড় করানো হচ্ছে। আমার মনে হয়, সে ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার।’
গত ১৩ জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের শৃঙ্খলা-২ শাখার উপ-সচিব পারভীন জুঁই স্বাক্ষরিত স্মারকে বিভাগীয় মামলায় তাকে চাকরি থেকে ‘বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান’ গুরুদণ্ড দেওয়ার বিষয়ে সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয়ের সচিবকে অনুরোধ করা হয়েছে।
তাতে বলা হয়েছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের এডিসি থাকাকালে নায়িকা পরীমণির সঙ্গে পরিচয়, যোগাযোগ শুরু হয় গোলাম সাকলায়েনের। তিনি নায়িকা পরীমণির বাসায় নিয়মিত রাত্রিযাপন করতে শুরু করেন। তার সব কিছুর প্রমাণ মিলেছে। তার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি নিয়েও কথা বলেন পরীমণি।
তিনি বলেন, পুরোটা বলার মতো পরিস্থিতি আমার এখনো আসেনি। যখন আসবে তখন অবশ্যই বলব। যদি কোনো কিছু নিয়ে আমাকে দোষী করা হয়, তখন অবশ্যই বলব। তা ছাড়া সম্পর্কের বিষয় যদি আসে, এটা তো একজনের ব্যাপার না, দুজনের পক্ষ থেকেই আসে। এখন পর্যন্তও আমাদের সম্পর্কটা তো মানুষের কাছে পরিষ্কার নয়। আমরা প্রেমে ছিলাম, নাকি কী করছি, কোনো কিছুই তো পরিষ্কার নয়। এটা না সাকলায়েনের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, না আমার কাছে। সবখানে মনগড়া জিনিস লেখা হয়েছে, জানাজানি হয়েছে। এটা যদি ঠিকঠাকভাবে জানতে হয়, দুই পক্ষ থেকেই জানতে হবে। যেহেতু তার বিষয়েও আমি এখন পর্যন্ত কিছু বলিনি, আমার বলার মতো পরিস্থিতি আসেও নাই বা আমি কোনো রকম বাধ্যও হইনি।
সাকলায়েন এবং আপনার মধ্যে সম্পর্কটা আসলে কী ছিল, এমন প্রশ্নের জবাবে পরীমণি বলেন, সম্পর্কটা ডিফাইন করার আগে এত অপবাদ নিয়ে ফেলছি, সেখানে এই সম্পর্কটা কী, তা নিয়ে কথা বলার জায়গাও তো জনগণ রাখেনি। আমার মনে হয় না এটার আর কোনো দরকার আছে, যেটা নিয়ে এগোনো যাবে। যেমন আছে না, কোনো একটা প্যাঁচ লাগছে, প্যাঁচটা খুলি।
বলছিলেন সাকলায়ের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে, কোথায় অন্যায় করা হলো? এমন প্রশ্নের মুখে পরীমণি বলেন, যদি আমার সঙ্গে কোনো সম্পর্কের কারণে এমনটা হয়েছে বলা হয়, তা তো নিঃসন্দেহে অন্যায়। কোনো সম্পর্কের জন্য এটা হতেই পারে না। কিছু বলার আগে এত বেশি দোষ আসলে ঘাড়ে নিয়ে ফেলছি, তাই এখন বলার ইচ্ছাও নেই।
পরীমণির জানান, একটা সম্পর্ক নিয়ে এত দোষারোপ হবে, এটা সে বুঝতেই পারেননি। নায়িকার ভাষ্য, সবাই না জেনে, না বুঝে আমাদের দোষ দিয়েছে। একটা সম্পর্ক নিয়ে এত দোষারোপ হবে, এটা তো বুঝতেই পারিনি।
গণমাধ্যমে দেওয়া আরেক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘বলতে গেলে তো অনেক কথাই আসবে। আমার জীবনের ২৭ দিন বা জেলজীবন, বাসা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া থেকে শুরু করে, বাসায় আসা পর্যন্ত কোনো কিছু নিয়ে আজ পর্যন্ত কারও সামনে কথা বলিনি। ২৭ দিনের ঘটনার কথা কোথাও ২৭ সেকেন্ডও বলিনি।’
তার দাবি সাকলায়েনের বিষয়টি সেই ২৭ দিনের মধ্যে পড়ে। পরীর বক্তব্য, ‘এই সবকিছুই ২৭ দিনের মধ্যে পড়ে। আমাকে রিমান্ডে কী করেছে, এটাও কেউ কখনো জানতে চায়নি। তাই আমি এটা নিয়েও কথা বলব না। আমি জানি না, যখন বলব তখন যে কী হবে। তবে সাকলায়েনের জন্য খারাপ লাগছে, সে ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার! প্রেম-ভালোবাসা যা-ই হোক না কেন, এটা শুধু একটা অদ্ভুত কারণ হিসেবে দাঁড় করানো হয়েছে। আবারও বলছি, আমার মনে হয়, সে অন্য কোথাও ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার।’