
অভিনেত্রী লিমা
নব্বই দশকে যে কজন নায়িকা ঢালিউডে নাম লিখেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম একজন লিমা। ক্যারিয়ারে তার সিনেমার সংখ্যা বেশি নয়। তবে তার অভিনীত সিনেমাগুলো বিভিন্ন কারণেই বেশ আলোচনায় আসে এবং ব্যবসা সফল হয়েছে। মাত্র ১৪ বছর বয়সে ‘সুখের আগুন’ সিনেমার মধ্য দিয়ে রুপালি পর্দায় আসেন তিনি।
প্রথম সিনেমা ব্যাবসায়িকভাবে সেভাবে সফল না হলেও তার অভিনয় নির্মাতাদের দৃষ্টিগোচর হয়। ক্যারিয়ারে টানা আট বছরে ২৫টির মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। লিমা অভিনীত সিনেমাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি সিনেমা ‘প্রেমগীত’। এ সিনেমা দিয়ে তিনি বাজিমাত করেন। তার ক্যারিয়ার পুরোপুরি বদলে দেয় এ সিনেমাটি। এটি ১৯৯৩ সালে মুক্তি পায়। এটির নির্মাতা দেলোয়ার জাহান ঝন্টু। ‘প্রেমগীত’ ছবি দিয়ে
জনপ্রিয় সারির অভিনেত্রীদের তালিকায় চলে আসেন লিমা। এ সিনেমার ‘আমার মনের ময়ূরী আয়রে’ গানটি এখনো শ্রোতাদের মুখে মুখে শোনা যায়। এতে ওমর সানীর সঙ্গে তার মিষ্টি রোমান্স ও বেদনার গল্প দর্শকের মনে দাগ কেটেছিল।
প্রয়াত নায়ক সালমানের সঙ্গেও দুটি সিনেমায় দেখা যায় লিমাকে। সিনেমা দুটি হলো ‘প্রেমযুদ্ধ’ ও ‘কন্যাদান’। প্রথম সারির বেশ কয়েকজন নায়কের সঙ্গে অভিনয় করলেও এ অভিনেত্রীর জুটি গড়ে উঠেছিল রুবেল ও বাপ্পারাজের সঙ্গে। বলা যায়, রুবেলের সঙ্গেই তার সিনেমা বেশি। লিমা অভিনীত কয়েকটি সিনেমা হলো ‘গরিবের সংসার’, ‘জজ ব্যারিস্টার’, ‘বাংলার কমান্ডো’, ‘নীল সাগরের তীরে’, ‘সতর্ক শয়তান’, ‘চাকরানী’, ‘আত্মসাৎ’, ‘হুলিয়া’, ‘নাগ নাগিনীর প্রেম’, ‘বনের রাজা টারজান’, ‘অগ্নিস্বাক্ষর’ ও ‘হাবিলদার’। লিমা ক্যারিয়ারে ভালো অবস্থানে থাকা অবস্থায়ই ফিল্ম ছেড়ে দেন। সেটা তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত ছিল। জানা যায়, বর্তমানে তিনি সংসারী পুরোদস্তুর। অভিনয় ছাড়ার পর লিমা মোহাম্মদপুরে বিউটি পারলারের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন।
লিমার পারিবারিক নাম শামীমা আলী লিমা। জন্ম কুমিল্লার দাউদকান্দিতে, বর্তমানে তিতাস থানায়। বেড়ে ওঠা ঢাকায়। তিন বোনের মধ্যে লিমা সবার বড়। বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। লিমাকে তার সময়ের দর্শক মজা করে বলত ‘মুটকি নায়িকা’ (মোটা নায়িকা অর্থে)। মোটা হলেও লিমা দেখতে যথেষ্ট সুন্দরী ছিল। তার সময়ের প্রথম সারির নায়কদের সঙ্গেই তিনি কাজ করেছেন। সেদিক থেকে বাণিজ্যিক ছবিতে লিমার অবস্থান শক্তপোক্ত ছিল।