
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কিংবদন্তী অভিনেত্রী ও নির্মাতা সারাহ বেগম কবরীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাত ১২টা ২০ মিনিটে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বাংলা সিনেমার ‘মিষ্টি মেয়ে’।
করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ১৩ দিনের মাথায় না ফেরার দেশে চলে গেলেন ৭০ বছরের এই অভিনেত্রী। দীর্ঘদিন ধরে কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর তার ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি হয়।
সাবেক এই সংসদ সদস্যের ছেলে শাকের চিশতী খবরটি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।

এর আগে, গত ৫ এপ্রিল কবরীর করোনা শনাক্ত হলে কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ৮ এপ্রিল শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয় তাকে। এরপর ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যা থেকে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি।
১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে জন্মগ্রহণ করেন মিনা পাল। শ্রীকৃষ্ণদাস পাল ও লাবণ্য প্রভা পালের ঘরে জন্ম নেয়া মিনা মাত্র ১৩ বছর বয়েসেই প্রতিভার পরিচয় দেন। ১৯৬৪ সালে নির্মাতা সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে মিনা পাল থেকে কবরী হয়ে উঠেন তিনি।

এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তিন দশকের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে তিনশ’র বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘সুজন সখী’, ‘ময়নামতি’, ‘ঢেউয়ের পর ঢেউ’, ‘পরিচয়’, ‘দেবদাস’, ‘অধিকার’, ‘বেঈমান’, ‘অবাক পৃথিবী’, ‘সোনালী আকাশ’, ‘দীপ নেভে নাই’, ‘সারেং বউ’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’-এর মতো দর্শকপ্রিয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন কবরী।

২০০৬ সালে ‘আয়না’ সিনেমার মাধ্যমে পরিচালনায় অভিষেক হয় কবরীর। সরকারি অনুদানে ‘এই তুমি সেই তুমি’ নামে দ্বিতীয় চলচ্চিত্র নির্মাণের কাজ চলছিল।

২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন কবরী।
লেখালেখির কাজেও প্রতিভার ছাপ রেখেছেন গুণী এই শিল্পী। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৭-তে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর স্মৃতিচারণমূলক বই ‘স্মৃতিটুকু থাক’।