Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

ডিম দিয়ে সমুদ্রে ফিরে গেল মা কাছিম

Icon

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১৪:৫৬

ডিম দিয়ে সমুদ্রে ফিরে গেল মা কাছিম

সৈকতে ১২৫টি ডিম দিয়ে গেল একটি সামুদ্রিক কাছিম। ছবি: কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রায় এক বছর পর আবারো কক্সবাজারে নির্জন সৈকতে ১২৫টি ডিম দিয়ে গেল একটি সামুদ্রিক কাছিম। গত মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট সংলগ্ন পেঁচার দ্বীপ সৈকতে কাছিমটি ডিম দিয়ে সমুদ্রে ফিরে যায়। 

নেচার কনজার্ভেশন ম্যানেজমেন্টের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপক মো. আব্দুল কাইয়ুম জানান, পেঁচার দ্বীপ সৈকত এলাকায় একটি অলিভ রিডলে কাছিম ১২৫টি ডিম দিয়ে গেছে। ইউএসএআইডির ইকো লাইফ প্রকল্পের আওতায় ন্যাচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্ট এক্স সিটু প্রদ্ধতিতে এসব ডিম সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এ মৌসুমে কক্সবাজার এলাকায় এই প্রথম সামুদ্রিক কাছিমের দেখা মিলেছে। কাছিমটি ১২৫টি ডিম দিয়ে নিরাপদে সাগরে ফিরে গেছে।

ন্যাচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্টের কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ডিম সংগ্রহ করে এক্স সিটু প্রদ্ধতিতে সৈকতের বালিয়াড়ির নিরাপদ স্থানে ডিমগুলো সংরক্ষণ করেন। 

ন্যাচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্টের সহকারী পরিচালক ড. শফিকুর রহমান জানিয়েছেন, হ্যাচারিতে আগামী প্রায় তিন মাস ডিমগুলো নিবিড় পরিচর্যা করা হবে। এরপর ডিম ফুটে বাচ্চা বের হলে কাছিমের বাচ্ছাগুলো আবার নিরাপদে সাগরে অবমুক্ত করা হবে। 

সাধারণত সামুদ্রিক কাছিম সৈকতে ডিম দেয় সেপ্টেম্বর থেকে এপ্রিল ও মে মাসে। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে কক্সবাজার সৈকতে সামুদ্রিক কাছিম খুব কমই দেখা যাচ্ছে। সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বরে কাছিম ডিম পাড়ার সময় হলেও কাছিম এসময়ে ডিম পাড়তে আসছে না। গত বছর জানুয়ারির ১৫ তারিখ কাছিম প্রথম ডিম দেয়। এ বছর জানুয়ারির ৩ তারিখ ডিম দিল। 

শফিকুর আরো জানান, কক্সবাজারের দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও সোনাদিয়া দ্বীপে ১০টি হ্যাচারি রয়েছে, যেখানে কাছিমের ডিম সংরক্ষণ করা হয়। আর সোনাদিয়া সেন্টমার্টিন এবং দীর্ঘ সমুদ্র সৈকতের ৫২টি স্পটে এসে কাছিম ডিম পাড়ত, এখন সৈকতের ৩৪টি স্পটে এসে কাছিম ডিম দেয়। ২০২২ সালে এসব স্পটে কাছিম ডিম দিয়েছে ৫ হাজার ৬৫০টি। এই ডিম থেকে ৪ হাজার ৩০০টির মতো বাচ্চা ফুটেছিল।

ন্যাচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্টের তথ্য মতে, প্রতিটি হ্যাচারিতে দুই থেকে আড়াই হাজার কাছিমের বাচ্চা ফুটে। এই হিসাবে কক্সবাজারে ২০ বছরে এই প্রকল্পের আওতায় প্রায় তিন লাখ কাছিমের বাচ্চা অবমুক্ত করা হয় সাগরে।

বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার জানান, দীর্ঘদিন পর সৈকতে কাছিম আসা একটি সুসংবাদ। কাছিমটি ১২৫টি ডিম দিয়েছে। হ্যাচারিতে এই ডিম থেকে প্রায় তিন মাস পর বাচ্চা ফুটবে। বাচ্চাগুলো সাগরে অবমুক্ত করা হবে। বাচ্চাগুলো ফিরে যাবে হাজার মাইল দূরে মা-বাবার আবাসস্থলে। যদি অন্যকোনো বিপর্যয় না ঘটে তবে এই বাচ্চাগুলো একদিন বড় হয়ে আবার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে কোনো এক পূর্ণিমা রাতে ডিম পাড়ার জন্য এই পেঁচার দ্বীপেই ফিরে আসবে, যেখানে একদিন তার মা এসেছিল ডিম পাড়ার জন্য। যে বালিয়াড়িতে একদিন তার জন্ম হয়েছিল।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫