সিংগাইরে অবাধে বিক্রি হচ্ছে ফসলী জমির মাটি

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬:১০
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে দুই থেকে তিন ফুঁট গভীর করে কৃষি জমির উপরের অংশ কাটা হচ্ছে। ছবি: মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে আবাদি কৃষি জমিকে অনাবাদি করতে মরিয়া এক শ্রেণির মাটি ব্যাবসায়ী। শতশত একর জমির উর্বর মাটি কেটে পাচারে মেতে ওঠেছে তারা। এতে করে ফসলী জমির উৎপাদন আশানুরুপ হচ্ছে না বলে জানিয়েছে কৃষি অফিস।
গতকাল শনিবার (২৮ জানুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দক্ষিণ জামশা, চারিগ্রাম ও খোলাপাড়া এলাকাসহ উপজেলার প্রায় এলাকায় খনন যন্ত্র (ভেকু) দিয়ে দুই থেকে তিন ফুঁট গভীর করে কৃষি জমির উপরের অংশ কাটা হচ্ছে। জমির মাঝখান দিয়ে গাড়ি চলাচলের রাস্তা করা হয়েছে। মাটি বহণ করছে ছয় চাকার ট্রাক্টর ও দশ চাকার ভারি ড্রাম ট্রাক। রাতে ড্রাম ট্রাকযোগে মাটি বিভিন্ন উপজেলাতেও পাচার করে দিচ্ছে এ চক্র। ট্রাক্টর প্রতি মাটি বিক্রি হচ্ছে হাজার টাকার উপরে এবং ড্রাম ট্রাকের মাটি প্রায় ১০ হাজার টাকায়। আর দশ চাকার ট্রাক প্রতি ১২ হাজার টাকা। ইটভাটা, বসতবাড়ি ও ভবন নির্মাণের জায়গা ভরাট করতে এসব মাটি ব্যবহার হচ্ছে।
সচেতন মহল জানান, সিংগাইর উপজেলাতে বৈধ-অবৈধভাবে সবচেয়ে বেশি ইটভাটা গড়ে তোলা হয়েছে। ইটভাটার মালিক ও দালাল চক্র কৃষকদের ফাঁদে ফেলে অল্প দামে মাটি কিনে নিচ্ছে। গভীর করে মাটি কেটে নেওয়ায় ওইসব জমিতে আগের মত ফসল ফলছে না। এখনই কৃষি জমি রক্ষায় তৎপর না হলে অনাবাদি হয়ে যাবে এ উপজেলার কৃষিক্ষেত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক কয়েকজন দালাল বলেন, প্রথমে এক কৃষককে ফাঁদে ফেলে তার জমি থেকে মাটি কেনা হয়। ওই জমি নিচু হয়ে গেলে তখন পাশের জমির কৃষকও বাঁধ্য হয়ে তার জমির মাটি বিক্রি করে, এভাবে শুরু করেন মাটি কেনার কাজ।
কৃষি জমির উর্বর মাটি ‘টপ সয়েল’ বিক্রি বন্ধে কৃষকদের সচেতন করছেন বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা টিপু সুলতান স্বপন।
তিনি বলেন, কৃষি জমির প্রাণ শক্তি জমির উর্বর মাটি, এটি আমাদের সম্পদ। যার ওপরের অংশে জৈব সার। এ জৈব সার বিক্রি করে দিলে ওই জমিতে আগের মত ফসল ফলে না। সার প্রয়োগ করলেও কাজে আসে না।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, সিংগাইরের নির্বাহী কর্মকর্তাকে কৃষি জমি রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।