
ডাবরা পালপাড়া কুমার পল্লী। ছবি: প্রতিনিধি
কালের বিবর্তনে আধুনিকতার ছোঁয়ায় মাটির তৈরি জিনিসপত্রের দিন দিন ব্যবহার কমতে শুরু করেছে। প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে মাটির তৈরি জিনিসের বিকল্প হিসেবে বাজার দখল করে নিয়েছে প্লাস্টিক, অ্যালুমিনিয়াম, স্টিল ও সিরামিক।
ফলে আধুনিক প্রযুক্তির তৈরি জিনিসপত্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে হারিয়ে যাচ্ছে মাটির তৈরি অনেক পণ্য। তবে মাটির তৈরি কিছু জিনিসপত্র এখনো বাজারে পুরোপুরি হারিয়ে যায়নি। শহরে মাটির তৈরি ফুলদানি ও বাহারি মাটির হাঁড়ির এখনো কদর রয়েছে।
রংপুরে মৃৎশিল্পের দাপট ও কদর অনেক। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় দেড় হাজারের অধিক পরিবার মাটির জিনিসপত্র তৈরি করে অত্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করত। সেই সময় উত্তরাঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে মাটির তৈরি এসব জিনিসপত্র সরবরাহ করত। বর্তমানে এ জেলায় পাঁচ শতাধিক পরিবার মৃৎশিল্পের কাজের সাথে সম্পৃক্ত থেকে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছেন।
আগের মতো চাহিদা আর পারিশ্রমিকের ন্যায্যমূল্য না থাকায় কুমার পেশার শ্রমিকরা অতি কষ্টে আর হতাশার দিন কাটাচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরে এ পেশায় জড়িত থাকার কারণে অন্য পেশায় নিজেদের খাপ খাওয়াতে পারছেন না মৃৎশিল্পের শ্রমিকরা।
আয় কম তারপর শুধু পারিশ্রমিকের আসায় বাপ-দাদার পুরনো ঐতিহ্য ধরে রাখতে মাটি দিয়ে তৈরি করছেন বিভিন্ন ধরনের ফুলদানি, গরুর চাড়ি, হাঁড়ি, সরা, কলস, বাসন, মুড়ি ভাজার খোলা, কোলা, ভাটি, পিঠা তৈরির খাঁজ, জালের কাঠি, মাটির ব্যাংক ও জলকান্দা ইত্যাদি। মিঠাপুকুর উপজেলার ডাবরা পালপাড়া গ্রামের কুমারপল্লীতে ঢুকলেই দেখা যায়, তাদের অতি কষ্টের জীবনযাত্রা। গোটা পল্লীতেই লেগে আছে যেন হাজারো কষ্ট আর অভাবের ছাপ।
ডাবরা পালপাড়া কুমার পল্লীর নেতা শ্রী মঞ্জুনাথ পাল জানান, বাজারে এখন মাটির তৈরি পণ্যের কোনো কদর নেই। প্লাস্টিক পণ্যের উপর মানুষের চাহিদা অনেক বেশি। মাটির জিনিসপত্রের প্রতি মানুষের আকর্ষণ দিন দিন কমে যাচ্ছে। এখন এই মৃৎশিল্পটি হারিয়ে যেতে বসেছে।
মিঠাপুকুর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিন বলেন, এই উপজেলায় অনেক মৃৎশিল্পী রয়েছে। তাদেরকে সরকারিভাবে সহযোগিতা করার চেষ্টা থাকবে।