Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

ইটভাটায় পুড়ছে শিশু শ্রমিকের স্বপ্ন

Icon

পাবনা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৫:০৪

ইটভাটায় পুড়ছে শিশু শ্রমিকের স্বপ্ন

ইটভাটায় পুড়ছে ১০-১৪ বছরের শিশু শ্রমিকের স্বপ্ন। ছবি: সংগৃহীত

শিশুশ্রম আর শিশু নির্যাতন প্রতিরোধের ক্ষেত্রে আইনি বিধান থাকলেও নেই কোনো প্রয়োগ। ফলে পাবনার ভাঙ্গুড়ায় শিশু শ্রমিকের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। ইটভাটায় পুড়ছে ১০-১৪ বছরের শিশু শ্রমিকের স্বপ্ন। উপজেলার বিভিন্ন ইটের ভাটা, দোকানপাট, গণপরিবহন, হোটেল-রেস্তোরাঁ, কাঁচাবাজার, বাসাবাড়িতে দারিদ্র্যের কারণে এসব শিশু শিক্ষার আলো থেকে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

শিশু শ্রমিকরা পেটের তাগিদে অল্প বেতনে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে যাচ্ছে। ফলে ভেস্তে যেতে বসেছে সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা কার্যক্রম। শিশুশ্রমের প্রধান কারণ দারিদ্র্য। বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনায় অনেক শিশু শ্রমিক চিরজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে।

শিশুদের স্কুলে নিয়ে আসা এবং ধরে রাখার জন্য ব্যাপকহারে উপ-বৃত্তি প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি থাকলেও ভাঙ্গুড়া উপজেলায় শিক্ষা বিভাগে তেমন কোনো কার্যকর ভূমিকা চোখে পড়ছে না। ফলে যে বয়সে শিশুদের স্কুলে যাওয়ার কথা সে বয়সের শিশুরা বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ ও অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দরিদ্রতার জালে আবদ্ধ এসব শিশু বিভিন্ন ইটের ভাটা, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, ক্ষুদ্র কারখানা, হোটেল, রেস্তোরাঁ, চা-দোকান, ওয়ার্কশপ, পুরনো গাড়ি মেরামত, ফার্নিচার, মিলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কঠোর পরিশ্রমের কাজ করছে। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুদের ব্যবহার করা হচ্ছে। নসিমন-করিমন, রিকশা, ভ্যান চালানো, পিকআপ ও বিভিন্ন ধরনের গাড়ির হেলপার, ইট পাথর ভাঙা, ওয়েল্ডিংয়ের কাজসহ নানা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। ফলে শিশুরা অল্প বয়সে লেখাপড়ার পরিবর্তে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। 

সূত্র মতে, সরকার ৬-১০ বছর বয়সী শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক এবং অবৈতনিক শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার বিনিময়ে খাদ্য ও উপবৃত্তি প্রকল্প চালু করলেও বেশির ভাগ এলাকায় শিশুদের ব্যাপকভাবে শিক্ষামুখী করা যাচ্ছে না মূলত নানা কারণে। আন্তর্জাতিক নীতিমালা শিশু শ্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকলেও প্রাকৃতিক বিপর্যয়, বন্যা, অনাবৃষ্টি, নদী ভাঙন, কৃষি উপকরণ ও দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি, অর্থনৈতিক সংকট, দারিদ্র্য ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে শিশুরা তাদের শ্রম বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। শিশুশ্রম সম্পর্কে একাধিক সমাজ সচেতন নাগরিকের সঙ্গে আলাপ করলে তারা সকলেই প্রায় একই কথা বলেছেন। শিশু শ্রমিকের বেতন তুলনামূলক কম হওয়ায় এবং কাজে কোনো ফাঁকি না থাকায় সকলেই এদের কাজে নিয়োগ করতে আগ্রহী। পেটের দায়ে শিশুরা ১২-১৬ ঘণ্টা শ্রম দেয়। 

এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন, শিশুদের শ্রমে নিয়োগ বেআইনি এবং নিন্দনীয় কাজ। পরিবারের সদস্যদের মাঝেও এ ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। এ উপজেলায় অনেক আগের তৈরিকৃত ১১ জন শিশু শ্রমিকের তালিকা থাকলেও এখন তা শতাধিক ছাড়িয়েছে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছি।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫