গাইবান্ধায় প্রতারক চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২৩, ১৫:৫২

গ্রেপ্তারকৃত প্রতারক চক্রের পাঁচ সদস্য। ছবি: গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় মেহনাজ আক্তার সাথী (২৫) নামের এক নারী ইমুর মাধ্যমে জহুরুল ইসলামের (৩১) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে প্রতারণা করা হয়। একইভাবে ওই নারীর স্বামী আরিফুল ইসলাম আরিফ (৩০) মোবাইল ফোনে আপেল মাহমুদ (৩০) নামের এক যুবকের সঙ্গে সু-সম্পর্ক করে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই দম্পতিসহ এই চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ রবিবার (৫ মার্চ) দুপুরে গাইবান্ধা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. কামাল হোসেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ঢাকার ধামরাই উপজেলার মুরারচর গ্রামের মৃত আমিরুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলাম আরিফ (৩০) ও তার স্ত্রী মেহনাজ আক্তার সাথী (২৫), গাইবান্ধা শহরের ডেভিট কোম্পানীপাড়ার রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে ফাহিম মিয়া (২২), গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তরফমন গ্রামের ময়নুল শেখের ছেলে রুবেল শেখ (২৫) ও বামনকুড়ি (কইপাড়া) গ্রামের জহুরুল আকন্দের ছেলে জুয়েল আকন্দ (২৬)।
পুলিশ সুপার মো. কামাল হোসেন বলেন, গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কচুয়া গ্রামের আজিজার রহমানের ছেলে আপেল মাহমুদের সঙ্গে ১৫ দিন আগে রুবেল শেখ ও জুয়েল আকন্দের মোবাইল ফোনে পরিচয় হয়। সেই সুবাদে আপেলকে গত ৩ মার্চ সন্ধ্যার দিকে গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে ডেকে নিয়ে আসে। একপর্যায়ে গোবিন্দগঞ্জ চারমাথা মোড়ের নূর জাহান আবাসিক হোটেলে ২০৯ নং রুমে আটক করে রাখে। সেখানে প্রতারণামূলকভাবে তার নগ্ন ছবি ও অশ্লীল ভিডিও তৈরি করার হুমকি প্রদর্শন করে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। দাবিকৃত চাঁদার টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠানোর জন্য আপেলকে দিয়ে তার পরিবারের লোকজনদের উপর চাপ প্রয়োগ করে। এই টাকা দিতে দেরি হওয়ায় আপেলকে মারপিট করে নগদ ১৮ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এসময় আপেল মাহমুদ তার পরিবারের লোকজনদের জানালে তার পরিবার গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের শরনাপন্ন হয়। পরে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে আপেল মাহমুদকে নুরজাহান আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার এবং প্রতারক রুবেল শেখ ও জুয়েল আকন্দকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অপরদিকে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার দক্ষিণ কুঠির গ্রামের এনছার আলীর জহুরুল ইসলামের সঙ্গে প্রায় ১০ দিন আগে মোছা. মেহনাজ আক্তার সাথীর ইমুর মাধ্যমে পরিচয় হয়। এর পর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। সেই সুবাদে মেনহাজ আক্তার সাথী মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে জহুরুলকে গত ৩ মার্চ গোবিন্দগঞ্জ এলাকার ভাড়া বাসায় ডেকে আনে। সেখানে সাথীর স্বামী আরিফ এবং তার সহযোগী ফাহিম মিয়া জিম্মি করে জহুরুলকে ঘরের ভেতর আটক করে রেখে মারপিট করে ২ লাখ টাকা দাবি করে এবং নগদ দেড় হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এসময় মোবাইল ফোনে জহুরুল তার পরিবারকে জানালে স্বজনরা গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের শরনাপন্ন হয়। পরবর্তী পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে ডায়াবেটিস হাসপাতালের পেছনে প্রতারকদের ভাড়া বাসা থেকে জহুরুল ইসলামকে উদ্ধার করাসহ প্রতারকদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানান গাইবান্ধার পুলিশ সুপার।