জামালপুরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

জামালপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২৩, ২২:০১

শাহজামাল নিম্ন মাধ্যমিক একাডেমি
জামালপুরের শাহজামাল নিম্ন মাধ্যমিক একাডেমির প্রধান শিক্ষক আখতারুজ্জামানের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগের নামে উৎকোচ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় বিরাজ করছে চরম অসন্তোষ।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, শাহজামাল নিম্ন মাধ্যমিক একাডেমি নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার আখড়ায় পরিণত হয়েছে। প্রক্সি শিক্ষক দিয়ে চলছে বিদ্যালয়। অফিস কক্ষে হাজিরা খাতা, রেজুলেশন খাতা ও মুভমেন্ট খাতা না থাকাসহ রয়েছে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। সরকারী নির্দেশনা উপেক্ষা করে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন হয়নি এখানে।
এদিকে শিক্ষক নিয়োগের নামে কয়েকজনের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অথচ এমপিওভুক্ত বিদ্যালয়ে স্থানীয়ভাবে শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার সুযোগ নেই। শাম্মী ও শওকত নামে দুইজনকে সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে ১২ লাখ টাকা দাবি করেন প্রধান শিক্ষক। তারা ৬ লাখ টাকা ইতোমধ্যে প্রধান শিক্ষকের হাতে তুলে দিয়েছেন।
বিদ্যালয় সূত্র জানায়, অফিস সহকারী পদে ১৩ বছর ধরে চাকরি করছেন রাসেল মাহমুদ। এমপিওভুক্তির পর চাকরি স্থায়ী করার জন্য ৬ লাখ টাকা দাবি করেন প্রধান শিক্ষক। রাসেল ৫ লাখ টাকা স্বীকার করে প্রাথমিক পর্যায়ে ৬৫ হাজার টাকা প্রদান করেন। এদিকে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে বেশি টাকার বিনিময়ে অন্য একজনকে চাকরি দেন বলে অভিযোগ করেছেন রাসেল মাহমুদ। এছাড়াও আরো অনেকের কাছে এমনিভাবে নিয়োগ দেয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন আখতারুজ্জামান।
শিক্ষক আরমান হোসেন অভিযোগ করেন, সহকারী শিক্ষক পদে চার বছর চাকরি করেছি। বিদ্যালয় এমপিওভুক্তির পর চাকরি স্থায়ীকরণের কথা বলে প্রধান শিক্ষক আখতারুজ্জামান আমার কাছে ৬ লাখ টাকা দাবি করেন। আমি ৩৫ হাজার টাকা দিয়েছি। বাকি টাকা না দেয়ায় আমাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন তিনি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক আখতারুজ্জামান বলেন, শিক্ষক ও অফিস সহকারী পদে নিয়োগের জন্য যাদের টাকা নিয়েছি তাদের টাকা স্কুলের কাজে ব্যবহার করেছি। তাদের সকলের টাকা আমি ফিরিয়ে দিবো। স্কুলে নিরাপত্তা না থাকায় হাজিরা খাতা, রেজুলেশন খাতা ও মুভমেন্ট খাতাসহ অন্যান্য ডকুমেন্ট তার বাড়িতে রাখেন বলে জানান। তবে তার বিরুদ্ধে অন্যসব অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেন তিনি।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষকের নামে আমার কাছে নানা অনিয়মের অভিযোগ আসে। তাকে প্রথমে মৌখিকভাবে সর্তক করি। তারপরও অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা অব্যাহত থাকায় একাধিকবার কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। কিন্তু তিনি কোনো জবাব দেননি। মনগড়াভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা করে আসছেন। ম্যানেজিং কমিটির পক্ষ থেকে শিক্ষা অফিসকে অব্যাহতি করলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার ছানোয়ার হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষকের এসব বিষয় নিয়ে বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।