Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

শ্লীলতাহানির সাক্ষীকে পেটালো অভিযুক্ত ২ শিক্ষক

Icon

রাজশাহী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২৩, ১৭:০৫

শ্লীলতাহানির সাক্ষীকে পেটালো অভিযুক্ত ২ শিক্ষক

হামলায় আহত দুইজন। ছবি: রাজশাহী প্রতিনিধি

রাজশাহীর মোহনপুর ধুরইল ইসলামিয়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসার এক ছাত্রীকে পানবরজে টেনে নিয়ে শ্লীলতাহানি করে এক বখাটে। সেই ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগে মাদ্রাসা কর্মচারী সাক্ষী হলে ক্ষিপ্ত হন একই মাদ্রাসার দুই সহকারী শিক্ষক খোরশেদ ও মুসাদ আলী। দুই শিক্ষক অভিযুক্ত বখাটের আত্মীয় বলে জানা গেছে।

যার ফলে সাক্ষীকে বিভিন্ন অপবাদে বাঁশের লাঠি ও লোহার রড দিয়ে মারধর করে। ওই সাক্ষী মাদ্রাসা কর্মচারী জ্ঞান হারিয়ে ফেললে অভিযুক্তরা তাকে সুপারিন্টেনডেন্ট কক্ষে আটকে রাখে। আহত কর্মচারীর নাম মো. আলাউদ্দিন মন্ডল (৫১)।

ভুক্তভোগীর পরিবার, মাদ্রাসা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ১ ফেব্রুয়ারি বুধবার ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে মাদ্রাসা যাওয়ার পথে এলাকার বখাটে সোয়াইবুর পানবরজে টেনে নিয়ে শ্লীলতাহানি করার সময় মাদ্রাসা কর্মচারী দেখে ফেলে।

৩ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ভুক্তভোগীর বাবা মাদ্রাসা কর্মচারী আলাউদ্দিনকে সাক্ষী করে থানায় অভিযোগ দেন। এ ঘটনায় সাক্ষী হওয়ায় কর্মচারী আলাউদ্দিনের উপর চরম ক্ষিপ্ত হন অভিযুক্ত দুই শিক্ষক খোরশেদ ও মুসাদ আলী। 

অভিযোগ পেয়ে ঘটনা তদন্তে যায় মোহনপুর থানা পুলিশ। পুলিশ এলাকা থেকে চলে আসার পর রাতে বখাটে সোয়াইবুরের বড় চাচা মুসাদসহ চারজন মিলে ওই ছাত্রীর চাচা রাশিকুল ইসলাম মৃধা ওরফে বাবুকে (৩২) মাথায় ইট মেরে গুরুতর রক্তাক্ত  জখম করে। তার মাথায় ৫টি সেলাই পড়ে। তিনি বর্তমানে মোহনপুর সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার পর থেকে পুলিশ টহলের কারণে অভিযুক্তরা গা ঢাকা দিয়েছে।

এ ঘটনার রেশ না কাটতেই অভিযুক্ত দুই শিক্ষক গতকাল রবিবার (৫ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার সময় মাদ্রাসা চলাকালীন সময়ে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পিকনিক ইস্যুতে কর্মচারী আলাউদ্দিনকে বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে সহকারী দুই শিক্ষক খোরশেদ ও মুসাদ প্রথমে বাঁশের লাঠি ও পরে লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকে। এসময় মাদ্রাসার সুপারিন্টেনডেন্ট মাওলানা নুরুজ্জামান তাদের মারধরে বাধা দিলে তাকেও অপমান অপদস্থ ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে ও ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দেয়।

গুরুতর আহত কর্মচারী যেন চিকিৎসা সেবা নিতে না পারে সেজন্য তারা তাকে মাদ্রাসা প্রধানের কক্ষে আটকে রাখে। জ্ঞান ফিরে কর্মচারী আলাউদ্দিন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল করলে পুলিশ তাকে থানায় আসতে বলে। এদিকে খবর পেয়ে মাদ্রাসা সভাপতি ওয়াজেদ আলী শাহ্ তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য মোহনপুর সরকারি হাসপাতালে পাঠান। তিনি এখন মোহনপুর সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জানতে চাইলে ধুরইল ইসলামিয়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সুপারিন্টেনডেন্ট মাওলানা মো. নুরুজ্জামান বলেন, আমি ওই দুই শিক্ষককে বার বার অনুরোধ করলেও তারা আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয় এবং লোহার রড দিয়ে কর্মচারী আলাউদ্দিনকে ব্যাপক মারধর করে আমার কক্ষে আটকে রাখে। এ ঘটনায় সভাপতির সিদ্ধান্তে অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মোহনপুর থানা কর্মকর্তা মোহা. সেলিম বাদশাহ্ বলেন, ইভটিজিং ও মারামারি সংক্রান্ত একটি অভিযোগ আগেই পেয়েছি। মাদ্রাসা কর্মচারী থানায় এসেছিলেন। তাকে চিকিৎসা নিতে পরামর্শ দিয়েছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫