স্কুলছাত্র পায়েল হত্যার ৮ বছর, শেষ হয়নি বিচার

নাজমুস সাকিব মুন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২৩, ১৫:০৭

হত্যার শিকার স্কুলছাত্র পায়েল। ছবি: পঞ্চগড় প্রতিনিধি
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে স্কুল ছাত্র আসাদুজ্জামান পায়েলকে অপহরণের পর হত্যার ৮ বছর হতে চললেও এখনো শেষ হয়নি মামলার বিচার কাজ। ছেলে হত্যার সুবিচার পেতে ২০১৫ সাল থেকে আদালতে ঘুরছেন বাবা সুলতান আলী।
দ্রুততম সময়ে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার শেষ করে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
নিহত আসাদুজ্জামান পায়েলের বাড়ি দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের বলরামপুর তাতীপাড়া। তিনি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
২০১৫ সালের ১৮ জুন রাতে নিখোঁজ হন পায়েল। নিখোঁজের ৪ দিন পরে তথা ২২ জুন বিকেলে বাড়ির এক কিলোমিটার দুরের একটি ডোবা থেকে তার বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত তিনজনকে আটকের পর পুলিশে সোপর্দ করে। ওই দিনই মামলা দায়ের করেন পায়েলের বাবা সুলতান আলী।
অভিযুক্ত তিনজন হলেন- একই এলাকার মহির উদ্দীনের ছেলে নুরুজ্জামান (৩৭), ডাহেনাপাড়া এলাকার দুদু মিয়ার ছেলে ফরহাদ হোসেন (২৯) ও বলরামপুর এলাকার রশিদুল ইসলামের ছেলে হাসানুল ইসলাম (৩১)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, স্কুলছাত্র পায়েল নিখোঁজের ২৪ ঘণ্টা পর তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর থেকে ফোন আসে তার বাবার কাছে। ফোনের ওই প্রান্ত থেকে বিকৃত কণ্ঠে ছেলের মুক্তিপণ বাবদ তিনলাখ টাকা দাবি করা হয়। কিন্তু টাকা নিয়ে কোথায় যেতে হবে তা জানানো হয়নি। পরে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে অপহরণে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় ওই তিনজনের। পরে স্থানীয়ভাবে বসে ওই তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা হত্যার কথা স্বীকার করেন। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ডোবা থেকে বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মামলার বাদী নিহতের বাবা সুলতান আলী জানান, পুলিশ ২০১৫ সালের ৩১ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করলে বিচার কাজ শুরু হয়। এর পর ৮ বছর হয়ে গেলেও বিচারকাজ শেষ হয়নি। আসামিদের একজন জামিন নিয়ে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। অপর দুইজন জামিন নিয়ে বের হবার পর থেকেই লাপাত্তা। এ অবস্থায় হতাশায় ভুগছেন তার পরিবার।
তিনি বলেন, ঘাতকরা আমরা ছেলেকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে, কি অপরাধ ছিল আমার ছেলের আজও জানতে পারলাম না। অথচ বিভিন্নভাবে আমাক হমকি দিচ্ছে মামলাটি আপোসের জন্য। আমি ঘাতকদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।
এদিকে চাঞ্চল্যকর এ মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে দাবি করে চলতি মাসেই মামলার রায় প্রত্যাশা করছেন রাষ্ট্রপক্ষ।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আমিনুর রহমান বলেন, বাদী অবশ্যই ন্যায় বিচার পাবেন। আমরা এ ব্যাপারে আশাবাদী।