Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

কক্সবাজারে ২৫ একর বনভূমি উদ্ধার

Icon

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৩, ১৫:৩২

কক্সবাজারে ২৫ একর বনভূমি উদ্ধার

পাহাড়ি জমি অভিযান চালিয়ে দখলমুক্ত। ছবি: কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের আওতাধীন রামু দক্ষিণ মিঠাছড়ির চেইন্দা খোন্দকারপাড়ার পশ্চিমে প্রস্তাবিত বনভূমির ২৫ একর পাহাড়ি জমি অভিযান চালিয়ে দখলমুক্ত করেছে বনবিভাগ।

স্থানীয় আবু তাহের, সাইদুল আলম ও আজিজুল হকসহ বেশকিছু প্রভাবশালী  মিলে গড়ে তুলেছেন বিশাল সাম্রাজ্য। রোপণ করেছেন প্রায় লক্ষাধিক ফল ও সবজি গাছের চারা। দখলে নিয়েছেন প্রায় ৭০/৭৫ একর জমি। সেখানে পান বরজ, পোল্ট্রি ফার্ম, মৎস্য খামার, ডেইরি ফার্ম ও বরইসহ বিভিন্ন ফলের চারা রোপণ করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, পাহাড় কেটে ৩/৪ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করেছে বনখেকোরা। এমনকি সেখানে বৈদ্যুতিক সংযোগ নিয়েছেন অনেক দূর থেকে। যেখানে কিছুদিন আগে ও ঘন সবুজ জঙ্গল ছিল। ছিল হাতিসহ জীবজন্তুর অভয়াশ্রম।

আজিজুল হক বলেন, বনবিভাগ ওই জমি তাকে ভোগ দখল করে ক্ষেত খামার করতে বলেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে আজিজুল হক প্রায় ১৫ একর সংরক্ষিত বনাঞ্চলের জমি স্ট্যাম্পমূলে বিক্রি করে দিয়েছেন।

সেখানকার বনভূমি জবরদখলের তালিকায় আছেন সাবেক চেয়ারম্যান মো. ইউনুচ ভুট্টাসহ প্রায় ২৫/৩০ জন।

স্থানীয় ফরিদুল আলম বলেন, চেয়ারম্যান ইউনুচ ভুট্টাে ও তার লালিত প্রভাবশালীচক্র দেদারসে পাহাড়ি ভূমি দখল করে প্লট করে বিক্রি করছেন।

বনভূমি দখলে থাকা প্রভাবশালীদের রয়েছে সশস্ত্র লাঠিয়াল বাহিনী। তারা জবরদখলকৃত পাহাড়ে সব সময় সশস্ত্র অবস্থায় থাকে। ফলে বনকর্মী ও সাধারণ লোকজনকে ঝুঁকি নিয়ে সেখানে যাতায়াত করতে হয়।

সর্বশেষ গতকাল (১৪ মার্চ) মঙ্গলবার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সারওয়ার আলমের নেতৃত্বে কক্সবাজার রেঞ্জের চেইন্দা বিটের চেইন্দা মৌজার সরকারী বনভূমিতে বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ চারা রোপণের মাধ্যমে বন ভূমি জবর দখলকারীদের উচ্ছেদ করতে দিন ভর অভিযান চালিয়েছেন বনবিভাগ।

এ ব্যাপারে স্থানীয় বিট কর্মকর্তা ফসিউল আলম শুভ একাধিক বার বাধা প্রদান করে, জবরদখল কার্যক্রম প্রতিহত করার চেষ্টা করেছিলেন। এর পরও জবরদখলের চেষ্টা অব্যাহত থাকায় পানেরছড়া ও ধোয়াপালং রেঞ্জের সকল স্টাফ এবং সিপিজিদের সমন্বয়ে  চালানো হয় অভিযান। ইতিমধ্যে উক্ত স্থানে জবরদখল উচ্ছেদ পূর্বক সামাজিক বনায়নের আওতায় আনার জন্য সরকারিভাবে নার্সারি সৃজনের কাজ চলছে। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে প্রস্তাবিত বাগানের সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিবছরই বনায়ন সৃজনের মাধ্যমে জবরদখল উচ্ছেদ পূর্বক বন বিভাগের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয় ব্যাহত হওয়া বনভূমি । উক্ত  অভিযানে প্রায় ২০-২৫ একর বন ভূমি উদ্ধার করা সম্ভব হয়। বাকি জবর দখলে থাকা বনভূমি ও উদ্ধারের পর বনায়ন সৃজন করার কাজ করা হবে বলে জানান, রেঞ্জ কর্মকর্তা সমীর রঞ্জন সাহা।

বিভাগীয় বনকর্মকর্তা সরওয়ার আলম বলেন, স্বল্প জনবল নিয়ে বিশাল বনভূমি রক্ষা করা রীতিমতো চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বনাঞ্চল রক্ষা করতে গিয়ে অনেক বন কর্মকর্তা কর্মচারী হতাহত হয়েছে বিভিন্ন বিটে। তারপর ও জীবনের সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে প্রাণপণ চেষ্টা করছি বন রক্ষায়। বনখেকোদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে মামলা করে যাচ্ছি আমরা।অনেক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও করেছি। সবশেষ কথা হচ্ছে বন বিভাগের একার পক্ষে শতভাগ বন রক্ষা করা সম্ভব নয়।

এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সচেতন সমাজকর্মীদের এগিয়ে আসতে হবে।অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা বন ভূমি দখলে মরিয়া। এমনকি বনভূমি দখলকারীদের পক্ষে অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা এসে তকবীর করে থাকেন। তাই বনবিভাগের একার পক্ষে যেইটুকু করা সম্ভব সবটুকু করছি আমরা। কারণ আমাদের ও জীবনের মায়া আছে, পরিবার আছে, তাদের কথাও ভাবতে হচ্ছে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫