
বরিশালের মানচিত্র
টিসিবির পণ্য বিতরণে অনিয়ম ও অবৈধভাবে মজুদের অভিযোগে বরিশাল নগরীর এক টিসিবি ডিলার ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
আজ শনিবার (১৮ মার্চ) সকালে মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাটি দায়ের করেন নগরীর ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইছাকাঠী এলাকার বাসিন্দা মো. সাইফুল ইসলাম।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হেলালউদ্দিন। তিনি জানান, মামলায় কাশিপুর বাজারের টিসিবির ডিলার ও মেসার্স চৌধুরী স্টোরের প্রোপাইটর মো. হুমায়ুন কবির (৪৫) ও তার সহযোগী নগরীর কাউনিয়া ব্রাঞ্চ রোড এলাকার মৃত শেখ মোকছেদ আলীর ছেলে শেখ মামুন মিয়াকে (৪২) আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে মামুন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
এর আগে গত শুক্রবার রাতে ডিলার পয়েন্টে টিসিবি ও সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় তারা সুবিধাভোগীদের মাঝে পণ্য বিক্রিতে অনিয়ম ও অবৈধভাবে মজুদের প্রমাণ পায়।
এসময় বঞ্চিত সুবিধাভোগীরা ক্ষুব্ধ হলে ডিলারের সহযোগী শেখ মামুন মিয়াকে আটক করে পুলিশ। তাছাড়া ডিলারের গুদাম তালাবদ্ধ করে পণ্যগুলো স্থানীয় কাউন্সিলরের হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানান টিসিবির সহকারী পরিচালক শতদল সরকার।
মামলার এজাহারে উল্লেখ্য করা হয়েছে, ডিলার হুমায়ুন কবির টিসিবি থেকে তার প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ন্যায্যমূল্যের পণ্য সরবরাহ করে জনসাধারণের মাঝে বিতরণ করে। গত ১৭ মার্চ দুপুরে কয়েকজন উপকারভোগী ন্যায্যমূল্যে পণ্য কিনতে ডিলারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যান।
এসময় মরিয়ম বেগমসহ কয়েকজন উপকারভোগী তাদের কার্ড দিলে তা স্ক্যান করে অন্য কেউ পণ্য নিয়ে গেছে বলে জানায় ডিলার হুমায়ুন কবির। এ নিয়ে টিসিবির ডিলারের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি স্টোরের ভেতরে ঢুকতে চাইলে তাদের বাধা দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে বিষয়টি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসকে জানানো হলে তিনি টিসিবির সহকারী পরিচালককে অবহিত করেন। একই সময় ঘটনাস্থলে পুলিশ আসলে কাউন্সিলরসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ডিলারের প্রতিষ্ঠানের সাটার খোলা হয়।
মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়েছে, হুমায়ুন কবিরের টিসিবির ডিলার পয়েন্টে সর্বমোট সুবিধাভোগী ৬৮৮ জন। আর ডিজিটাল অ্যাপস মোতাবেক ৬২১ জন সুবিধাভোগীকে মালামাল সরবরাহ করেছেন তিনি। সেই হিসেব অনুযায়ী ডিলার পয়েন্টে টিসিবির ১৩৪ লিটার সয়াবিন তৈল, ১৩৪ কেজি ডাল, ৬৭ কেজি ছোলা, ৬৭ কেজি চিনি থাকার কথা থাকা। কিন্তু সেখানে টিসিবির ২৪৬ লিটার সয়াবিন তেল, ২২৬ কেজি ডাল, ১২৯ কেজি ছোলা, ১০০ কেজি চিনি পাওয়া যায়। এছাড়া তার এক আত্মীয়ের বাসায় ৭ লিটার সয়াবিন তৈল, ৪ কেজি চিনি পাওয়া যায়।
লিখিত এজাহারে বলা হয়েছে, ডিলার ও তার সহযোগী টিসিবির পণ্য সুবিধাভোগীদের কাছে ন্যায্য মূল্যে সরবরাহ না করে ডিলার পয়েন্টে মজুদ রেখে অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে প্রতারণা করে আত্মসাৎ করেছেন।
এ বিষয়ে টিসিবির সহকারী পরিচালক শতদল সরকার বলেন, সুবিধাভোগীদের মাঝে বিতরণ না করে মজুদ করা পণ্য স্টোর তালাবদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। পরে বিসিসির প্রশাসনিক কর্মকর্তার উপস্থিতিতে ২৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ফরিদ হোসেনে জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে ডিলারের সহযোগী শেখ মামুনকে আটক করেছে পুলিশ।
শতদল সরকার বলেন, সংশ্লিষ্ট ডিলারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর কাউন্সিলরের হেফাজতে থাকা পণ্যের বিষয়ে বিসিসির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।