Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

বিকল্প সড়ক না করেই সেতু নির্মাণ, মানুষের দুর্ভোগ

Icon

শেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৩, ১৪:৪০

বিকল্প সড়ক না করেই সেতু নির্মাণ, মানুষের দুর্ভোগ

বিকল্প সড়ক না থাকায় চরম ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ। ছবি: শেরপুর প্রতিনিধি

শেরপুরের প্রত্যন্ত গ্রামে বিকল্প সড়ক তৈরি না করেই একটি নতুন সেতুর নির্মাণ কাজ চলছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে দুই পারে বসবাসকারী কয়েক গ্রামের সাধারণ মানুষ ও স্কুল শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে অসুস্থ ও গুরুতর রোগীদের চিকিৎসাসহ হাসপাতালে আনা-নেওয়ায় বিপাকে পড়েছে স্বজনেরা। নিচু এলাকা হওয়ায় সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে সেতু এলাকায় এখন হাঁটু পানি জমে গেছে।

বিকল্প সড়ক তৈরি না করে মূল সড়ক কেটে ফেলায় ওই স্থান দিয়ে সাইকেল, রিকশা, ভ্যান, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছে। জনসাধারণের চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বিকল্প সড়ক তৈরি ও দ্রুত সময়ের মধ্যে বিকল্প সড়ক এবং ওই সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা।

গত আড়াই মাস আগে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সেতুর কাজ শুরু করলেও কেবল কিছু ইটের খোয়া জমা করেছে সেতুর কাজে। বিষয়টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের খামখেয়ালীপনা ও প্রশাসনের নজরদারীর অভাব বলে জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মানুষ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলা সদরের লছমনপুর ইউনিয়নের লছমনপুর গ্রামের জমসেদ আলী মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের পিছনের সড়কে নির্মাণ হচ্ছে সেতুটি। কিন্তু বিকল্প রাস্তা না থাকায় পায়ে হেটে ধান ক্ষেতের আইল দিয়ে আবার কেউ কেউ পানিতে ভিজেই রাস্তা পার হচ্ছে। বিকল্প রাস্তা তৈরি না করলেও আগে খানা-খন্দক পাড়ি দিয়ে যাতায়াত করতো। কিন্তু সেখানে এখন টানা বৃষ্টিতে হাঁটু পানি জমা হয়েছে। এতে ইউনিয়নের হাতি আগলা পূর্ব ও পশ্চিম পাড়া এবং মোল্লাপাড়া গ্রামের প্রায় ৫ হাজার মানুষের একমাত্র কেন্দ্রবিন্দু কুসুমহাটি বাজার হয়ে শহরে যেতে তাদের বেছে নিতে হচ্ছে বিকল্প পথ। ফলে তাদের দৈনন্দিন যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনে সড়কটি ব্যবহার করে যেখানে সময় লাগতো ১০ মিনিট এখন লাগছে ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট।

প্রকল্প কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৫ মিটার লম্বা সেতুটির নির্মাণ কাজ পেয়েছেন মেসার্স নাফিউ কন্সট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আড়াই মাস আগে রাস্তা ভেঙে পাইলিং এর কাজ শুরু করেন ঠিকাদারের লোকজন। এর পর থেকে শুরু হয় এ দুর্ভোগ। এর উপর চৈত্রের হঠাৎ টানা বৃষ্টিতে দুর্ভোগ আরো চরম আকার ধারণ করেছে।

হাতি আগলা গ্রামের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছাদিয়া আক্তার বলেন, আমাদের প্রতিদিন স্কুল ও প্রাইভেটে যেতে হয়। এই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আমাদের জোমা-কাপড় ও স্কুল ড্রেস ভিজে যায়। পানি জমার আগে কষ্ট হলেও কষ্ট করে পারাপার হতাম। কিন্তু বৃষ্টি হওয়ায় পানি জমে গিয়ে এখন আমাদের যাতায়াতে আরো বেশি সমস্যা হচ্ছে।

মোল্লা পাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল্লাহ বলেন, তারা যখন মনে চায় তখন ব্রিজ তৈরি করুক। ব্রিজ তৈরির জন্য রাস্তা কেটে ফেলায় এখন তো হাঁটু পানি হয়ে গেছে। আমরা আমাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য নিয়ে কিভাবে বাজারে যাবো ? পাশ দিয়ে যদি একটা রাস্তা তৈরি করে দিতো তাহলে তো সমস্যা হতো না। আমাদের হাট-বাজারে যাওয়া খুবই কষ্ট হচ্ছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্বাস আলী আক্ষেপ করে বলেন, আমি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বলেছি, আপনাদের নির্মাণকাজ চলাকালীন সময়ে পাশ দিয়ে অস্থায়ী বিকল্প রাস্তা তৈরি করে দেন যাতে মানুষ চলাচল করতে পারে। কিন্তু তারা আমার কথা শোনেনি। এর আগেও এই ঠিকাদার আমাদের আরেকটি রাস্তার সেতুর কাজ পায়। সেখানেও তারা বিকল্প রাস্তা তৈরি করেনি। পরে বাধ্য হয়ে আমরা এলাকাবাসী নিজেরা বিকল্প রাস্তা তৈরি করেছি।

লছমনপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বলেন, আমি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা বলে বিষয়টি অবহিত করেছি এবং তাদের দ্রুত নির্মাণকাজ শেষ করার অনুরোধ করেছি।

এ বিষয়ে ঠিকাদার সৈয়দ উজ্জল জানায়, বিকল্প রাস্তা করা হলেও পানিতে তা ভেসে গেছে। তবে ওই সড়কের কাছাকাছি অন্য একটি সড়ক আছে সেখান দিয়ে মানুষ যাতায়াত করতে পারবে।

এ ব্যাপারে শেরপুর সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ খবিরুজ্জামান খান বলেন, সেতুর নির্মাণাধীন রয়েছে। যেকোনো ব্রিজ তৈরির সময় ডাইভারশান রোড বা বিকল্প বাইপাস সড়ক তৈরি করতে হয়। আমরা দ্রুত রাস্তা করে দেব।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫