
স্প্রে ব্যবহার করেও মশার আক্রমণ থেকে মুক্তি মিলছে না টাঙ্গাইলবাসীর। ছবি: প্রতিনিধি
মশার অত্যাচারে রীতিমতো অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে জনজীবন। মশার উপদ্রব এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, সন্ধ্যায় বসত-বাড়ির দরজা-জানালা খোলা রাখা যাচ্ছে না। সন্ধ্যায় কোনো স্থানে স্থির হয়ে বসা তো দূরের কথা, দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে চতুর্দিকে মশা তার বাহিনী নিয়ে আক্রমণে নামে। বাসা-বাড়ি, স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত, বাজার-পার্ক, রাস্তা-ঘাট, যানবাহন এমনকি খেলার মাঠেও মশার যন্ত্রণা থেকে স্বস্তি পাচ্ছে না নগরবাসী।
শুধু সন্ধ্যা বা রাতে নয় বরং প্রতি মুহূর্তে চলছে এদের অবিরাম অত্যাচার। কয়েল, মশক নিধন ব্যাট, স্প্রে ব্যবহার করেও মশার আক্রমণ থেকে মুক্তি মিলছে না। শহর জুড়ে চলছে মশার রাজত্ব।
সম্প্রতি টাঙ্গাইল সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল প্রাঙ্গণে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। ওই দিন সকাল ১১টায় সেখানে প্রতিটি স্টলেই কয়েল জ্বালিয়ে মশা নিধন করতে দেখা যায়।
টাঙ্গাইল পৌরসভা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পৌর এলাকায় প্রায় চার লাখ মানুষের বসবাস। প্রতিবছর মশা নিধনের জন্য ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়।
পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শহরের বিভিন্ন এলাকার ড্রেন ময়লা আবর্জনায় ভরে আছে। এছাড়াও শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া লৌহজং নদীতে ড্রেনের মাধ্যমে ময়লাযুক্ত পানি পড়ছে। ড্রেন ও নালার জমে থাকা পানিতে ভালো করে দেখলেই বোঝা যাচ্ছে মশার উপস্থিতি।
গত বছর আশঙ্কাজনক হারে দেখা দিয়েছিল ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার বাহক একধরনের এডিস মশা। দীর্ঘদিনের জমানো পানিতে এডিস মশার জন্ম। এডিস মশা পরিষ্কার ও স্বচ্ছ পানিতে ডিম পাড়ে। শহরে দেখা যায় অনেকে ফুলের টবে, চৌবাচ্চায়, অপ্রয়োজনীয় বালতি বা বোতলে পানি জমা করে রাখে।
এসব স্থানে এডিস মশা বংশ বৃদ্ধি করে থাকে। নগরীতে ড্রেন ও নালা সংস্কারের কাজ চলে বছর জুড়ে। সংস্কার কাজ সময়মতো না করে নির্মাণসামগ্রী রাস্তায় দিনের পর দিন সাজিয়ে রাখা, ড্রেনের ময়লা রাস্তায় স্তূপাকারে রাখা, যত্রতত্র ডাস্টবিন স্থাপন নগরীকে উন্মুক্ত ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করা এখনকার স্বাভাবিক চিত্র।
পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মী ফারুক হোসেন বলেন, ‘সাতজন প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে কাউন্সিলরদের নির্দেশনা অনুযায়ী মশার ওষুধ স্প্রে করি। একটি ওয়ার্ডে সপ্তাহে একদিন দায়িত্ব পালন করি। ওষুধ দিয়ে যাই, মশা না মরলে কিছু করার নেই।’
টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীর বলেন, ‘মশা মারার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। মশা নিধনের জন্য সর্বোচ্চ মানের ওষুধ ব্যবহার করছি।’