Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

সরকারি গুদামে ধান সরবরাহ করেনি কৃষক

Icon

বগুড়া প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:২৬

সরকারি গুদামে ধান সরবরাহ করেনি কৃষক

খোলা বাজারেই ধান বিক্রি করে বেশি লাভবান হয়েছে কৃষক। ছবি: প্রতিনিধি

বগুড়ায় আমন চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলেও ধানে অর্জন হয়নি। সরকারি গুদামে কোনো কৃষক ধান সরবরাহ করেনি। সময় বাড়িয়েও ধানের সংগ্রহ হয়নি। চলতি আমন সংগ্রহ মৌসুমে সরকারি গুদামের চেয়ে খোলা বাজারেই ধান বিক্রি করে বেশি লাভবান হয়েছে কৃষক। আর চাল সরবরাহে যেসব মিলার চুক্তি করেও চাল দেয়নি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে খাদ্য বিভাগ।

বগুড়া জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্র জানায়, আমন মৌসুমে ২৮ টাকা কেজি দরে ধান ও ৪২ টাকা কেজি দরে চাল কেনার সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১২টি উপজেলায় কৃষি অ্যাপের মাধ্যমে ‘আগে আসলে আগে পাবেন’ ভিত্তিতে ধান কেনার কথা। জেলায় নিবন্ধনকৃত ৬৩ হাজার ১৫১ জন কৃষকের মধ্যে অ্যাপসের মাধ্যমে ধান দেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন ৭ হাজার ৪৮৫ জন। এর মধ্যে লটারি করে ২ হাজার ৬৬ জনকে বাছাই করা হয়। চলতি আমন সংগ্রহ মৌসুমে জেলায় কৃষকদের কাছ থেকে ১০ হাজার ২২২ মেট্রিক টন ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কেউ এক ছটাক ধান বিক্রি করেনি সরকারি খাদ্যগুদামে। এরপর সময় বাড়িয়ে ৭ মার্চ সংগ্রহ অভিযানের শেষ দিন ঘোষণা করা হয়। সেখানেও ধান সংগ্রহ হয়নি। ধান কেনার শুরুর সময়ে জেলার হাটবাজারে মোটা ধান ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকা এবং চিকন ধান ১ হাজার ৩৫০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত মণ দরে বিক্রি হয়েছে। সরকারি দাম ছিল ১ হাজার ১২০ টাকা মণ। সে কারণে কৃষকরা সরকারি ঘরে ধান দিতে আগ্রহী ছিল না।

বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর সূত্র জানায়, জেলায় ১ হাজার ১২০ জন মিলারের মধ্যে ৬৮৯ জন চালকল মালিক ২০ হাজার ৯৮৫ মেট্রিক টন চাল সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। চাল সরবরাহে চুক্তি করেননি ৪৩১ জন মিলার। চাল কেনার জন্য চুক্তি না করায় তাদের খাদ্য বিভাগ থেকে কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়েছে। ৭ মার্চ শেষ দিন পর্যন্ত চুক্তির প্রায় ১৯ হাজার ৫২০ মেট্রিক টন চাল সরবরাহ করেছে মিলাররা। ১ হাজার ৪৬৫ মেট্রিক টন চাল সরবরাহ করেনি মিলাররা। বেশ কয়েকজন মিলার চুক্তি করেও চাল সরবরাহ করেনি। আর কৃষকরা কোনো ধানই দেননি। তবে ধান কেনার উদ্বোধন উপলক্ষে সরাসরি এক টন ধান কেনে খাদ্য বিভাগ।

বগুড়া জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় চলতি আমন মৌসুমে খাদ্য বিভাগ সরকারি তালিকাভুক্ত ২১৪টি হাসকিং ও ১৩টি অটো রাইসমিল থেকে ৫ হাজার ৮৭ মেট্রিক টন চাল এবং কৃষকদের কাছ থেকে ৬৪৯ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে।

দুপচাঁচিয়া উপজেলা চাল কল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, আমন মৌসুমের শুরু থেকেই ধানের দাম বেশি হওয়ায় ধান কিনে চাতালে সিদ্ধ করে শুকিয়ে মিলে ভেঙে সার্টার করে চাল গুদামে সরবরাহ করে লোকসান গুনতে হচ্ছে। এ লোকসানের ভয়ে অনেক মিলার সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েও চাল দেয়নি। তবে মিলের লাইসেন্স টিকাতে বাধ্য হয়ে কোনো কোনো মিলার চাল দিয়েছে। 

বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী সাইফুদ্দিন জানান, চলতি আমন সংগ্রহ অভিযানে সরকারিভাবে ধানের যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তার চেয়ে অনেক বেশি দামে ধান বেচাকেনা হয়েছে এবং হচ্ছে। এ কারণে খাদ্যগুদামে ধান সরবরাহ করতে কৃষক আগ্রহী হননি। চুক্তিবদ্ধ চালকলের মালিক সিংহভাগ চাল সরবরাহ করেছে। যেসব লাইসেন্সধারী মিলার চাল দেয়নি তাদের তালিকা করে জেলা খাদ্য অফিস থেকে কারণ দর্শানো নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫