
মাঠে পেঁয়াজ তুলছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: পাবনা প্রতিনিধি
রমজান মাসে পাবনার সাঁথিয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো খোলা থাকলেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম। যে সকল শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে তার মধ্যে অনেকই রোজা রাখে। রোজার মাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম হওয়ায় শিক্ষকদের ক্লাস নেওয়ার আগ্রহ কম। প্রতিটি শ্রেণিতে ৪০/৫০জন শিক্ষার্থীর স্থলে ৮/১০জন উপস্থিত থাকে।
সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর উপস্থিতির একই চিত্র। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের বিদ্যালয়গুলোতেই এর সংখ্যা বেশি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রমযান ও ঈদকে ঘিরে এলাকায় কৃষকের পেঁয়াজ তোলার ধুম পড়েছে। তাই বাবা-মার পাশাপাশি অনেক শিক্ষার্থী দিনমজুর হিসাবেও পেঁয়াজ তোলা, পেঁয়াজ কাটার কাজ করছে।
দেশের পেঁয়াজ খ্যাত এই উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, পেঁয়াজ তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছে এলাকার কৃষক। পেঁয়াজ তোলা, বাড়িতে নেওয়া, কাটা ও বস্তাজাত করা পর্যন্ত মা-বাবার সাথে যোগ দিচ্ছে শিক্ষার্থীরাও। ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো খোলা থাকলেও উপস্থিতি নেই তেমন।
উপজেলার সৈয়দপুরের প্রান্তিক কৃষক আলহাজ¦ উদ্দিন জানান, কৃষি শ্রমিকের মূল্য বেশি তাই ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে তানিয়াসহ পরিবারের সবাই এসেছি পেঁয়াজ তুলতে। আমি গরীব প্রান্তিক কৃষক। কৃষি কাজের পাশাপাশি ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাই।
তিনি বলেন, টাকা হলে ওদের জন্য ঈদের কিছু কেনাকাটা করতে পারবো। এ জন্য ওকে স্কুলে যেতে দেইনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রমজান ও ঈদকে সামনে রেখে কৃষি শ্রমিকের মূল্য বেশি থাকায় প্রান্তিক কৃষকের পেঁয়াজ মাঠ থেকে ঘরে তুলে আনতে সহযোগিতা করছে তাদের কোমলমতি সন্তানেরা। অনেক গরীব শিক্ষার্থী ঈদকে সামনে রেখে প্রতিদিন ৪/৫ শ’ টাকা করে দিনমজুর হিসাবে পেঁয়াজ তুলে দিচ্ছে কৃষকদের। আবার কৃষকের বাড়িতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা মণ প্রতি ২ থেকে ৪ কেজি পর্যন্ত পেঁয়াজ বিনিময় নিয়ে পেঁয়াজ কাটার কাজও করছে অনেকে।
জানতে চাইলে তারা জানান, সামনে ঈদে নতুন জামা কাপড় কিনতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
সাঁথিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মতে আমাদের বিদ্যালয় খোলা রাখা হয়েছে। কোন কারণে যদি শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে যায় সেক্ষেত্রে নির্দেশ রয়েছে হোম ওয়ার্কের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শতভাগ উপস্থিতি নিশ্চিত করা।