
কথিত প্রেমিকা রনি বেগম। ছবি: পুঠিয়া প্রতিনিধি
রাজশাহীর পুঠিয়ায় বিয়ের দাবি নিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে দুইদিন অবস্থানের পর কথিত প্রেমিকা এখন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। তবে একটি পক্ষ মোটা অংকের অর্থে সমঝোতা করতে চাপ দিচ্ছে বলে প্রেমিকের পরিবার অভিযোগ তুলেছেন। আর এ ঘটনার ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও ওই নারী থানায় অভিযোগ দেননি। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে নানা আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে।
কথিত প্রেমিকার নাম রনি বেগম। তিনি উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের তাজু মোল্লার স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে। আর প্রেমিক জমসেদ আলী একই গ্রামের আফসার সরদারের ছেলে।
গত বুধবার (২৯ মার্চ) বিকেল থেকে রনি বেগম তার কথিত প্রেমিক জমসেদের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান শুরু করেন।
ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনছার আলী বলেন, দুজনের বাড়ি একই গ্রামে। আর দুজনই বিবাহিত। ঘটনার দুইদিন আগে জমসেদ আলী নিজের কাজে এলাকার বাহিরে যান। আর হটাৎ করে বিয়ের দাবিতে অবস্থান করার বিষয়টি রহস্যজনক। এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি প্রভাব খাটিয়ে বিষয়টি গোপনে মীমাংসা করতে চেষ্টা করছেন। তারা আমাকেও বলেছিল। কিন্তু বিষয়টি জটিল হওয়ায় তাদেরকে আইনের মাধ্যমে যেতে বলেছি।
কথিত প্রেমিকা রনি বেগম বলেন, জমসেদ আলীর সাথে তার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। তিনি বিয়ের প্রলোভনে বিভিন্ন সময় শারীরিক সম্পর্ক করেছে। এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সে জন্য বিয়ের দাবি নিয়ে তার বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেখানের লোকজন আমাকে মারধর করেছে। যার কারণে এখন পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেছি।
এ বিষয়ে থানা পুলিশ অভিযোগ দিতে একাধিকবার ডাকলেও কেনো অভিযোগ দিচ্ছেন না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, একটু সুস্থ হয়ে অভিযোগ দিব।
এদিকে প্রেমিক জমসেদ আলীর স্ত্রী তাহমিনা বেগম বলেন, ওই নারী গত ২৯ মার্চ বিকেলে আমাদের বাড়িতে আসে। প্রথমে আমার স্বামীর সন্ধান করে। স্বামী বাড়ি নেই জানালে ওই নারী বলে আমার স্বামীর সাথে তার সম্পর্ক রয়েছে। এখন বিয়ের দাবি নিয়ে এসেছেন। এর কিছুক্ষণ পর ৪-৫ ব্যক্তি এসে বলেন, সম্মান বাঁচাতে ৬ লাখ টাকা দিতে হবে। নইলে ওই নারীর সাথে মোটা অংকের দেনমহরে বিয়ে দিয়ে দিবেন। সে সময় ওই নারীসহ আগত লোকজনদের থানা পুলিশে অভিযোগ দিতে বলেছি কিন্তু তারা যায়নি।
তিনি বলেন, ওই নারী দুইদিন বাড়িতে থাকার পর এখন আমাদের উপর মারধরের অভিযোগ তুলে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
তবে প্রেমিক জমসেদ আলী বলেন, স্কুল জীবনে তারা এক সাথে পড়েছে। সে সময় তাদের মধ্যে সাময়িক প্রেমের সম্পর্কও গড়ে উঠেছিল। তবে গত প্রায় ১৪ বছর আগে তার বিয়ে হয়ে যায়। আর আমিও অন্যত্রে বিয়ে করে সংসার করছি। কিন্তু ওই নারী অর্থ লোভে এলাকার একটি প্রতারক চক্রের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে। পরে পর্যায়ক্রমে সে তিনটি বিয়েও করে। আর ওই চক্রটির মাধ্যমে সকল স্বামীর কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে তাদের তালাক দেয়।
তিনি বলেন, সম্প্রতি সময়ে ওই নারী আমার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে। আমি সাড়া না দিলে প্রতারক চক্রের লোকজন ওই নারীকে আমার বাড়িতে তুলে দিয়েছে।
পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুন্সি আব্দুল বারী বলেন, বিয়ের দাবিতে ওই নারী অনশন করছে খবর পেয়ে ওইদিন পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তবে মেয়েটি থানায় না এসে তাকে জমসেদ আলী নামক এক ব্যক্তির সাথে বিয়ে দিতে বলেছিল। আমরা বারবার বলছি থানায় অভিযোগ দিতে। কিন্তু কি কারণে তারা থানায় আসছে না তা জানি না। তবে অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।