কাকডাকা ভোরে দাঁড়িয়ে আছে কিছু মানুষ। গায়ে জীর্ণ পোশাক, হাতে বাঁশের ঝাঁকা ও কোদাল। অপেক্ষা নিজেকে বিক্রি করার। তবে দাস কিংবা পণ্য হিসেবে নয়, বেচা-কেনা হয় শ্রমিক হিসেবে। শ্রম বিক্রির হাটে এরা সকলেই পণ্য। তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগেও ক্ষুধা আর দারিদ্র্যের নির্মম আঘাতে নিম্ন আয়ের মানুষগুলো আজও নিজেকে বিক্রি করেন শ্রমের হাটে। 

এমন চিত্র দেখা যায় পাবনার বড় বাজার, লাইব্রেরি বাজার, অনন্ত বাজার, কাশিনাথপুর বাজারসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায়। এসব হাটে রাজমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি, রংমিস্ত্রি ও দিনমজুরসহ বিভিন্ন পেশার শ্রমজীবী মানুষ আসেন কাজের সন্ধানে। তাদেরকে কিনতে আসেন অনেক প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার ও মালিকরা। কাজের সন্ধানে সকালে শ্রমিকের এমন হাটগুলো দিনমজুর বা কামলার হাট নামে পরিচিত। 

পরিবারের মুখে দুমুঠো খাবার তুলে দিতেই দূর-দূরান্ত থেকে শহরের বড় বাজারে কাজের সন্ধানে আসা দিনমজুর মো. হেদায়েত উল্লাহ, আসাদ, মমিন ও রোকন জানান, গ্রামে কাজ করি, সব সময় কাজ পাওয়া যায় না। এ জন্য শহরে আসি। সকালে আসলে কাজ পাই। 

তবে শ্রমের হাটে আসা অনেকে বিক্রি হলেও কিছু থেকে যান অবিক্রীত। হাটে আসা শ্রমিকদের কাজ পেলে মুখে হাসি ফোটে, আর কাজ না পেলে মলিন মুখ নিয়ে অপেক্ষা করতে হয় পরবর্তী দিনের জন্য। এ বিষয়ে পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. আব্দুল মজিদ জানান, এ মৌসুমে কাজ কম থাকায় কিছু শ্রমিকদের বিপাকে পড়তে হয়। দিনমজুররা কৃষি কাজের দিকে মনোযোগী হলে এই সংকট কেটে যাবে। এখন প্রায় প্রতিটি গ্রামে ধান রোপণ, গম, সরিষা কাটার কাজ চলছে।