ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ছবি: প্রতিনিধি
সরকারি হাসপাতালে গেলে রোগী আরও অসুস্থ হয়ে যায়, এমন ধারণা পোষণ করেন অনেকেই। আর এটিই যেন এ দেশের সরকারি স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থার করুণ বাস্তবতা। সরকারি হাসপাতালের অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশ, চিকিৎসক-নার্সদের অবহেলা, অপ্রতুল চিকিৎসা সরঞ্জাম, নিরাপত্তাহীনতা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ না থাকার কারণে বেসরকারিভাবে চিকিৎসাসেবা নিতে বাধ্য হচ্ছে বেশিরভাগ মানুষ।
আর সেখানেই ব্যতিক্রম গাইবান্ধার ফুলছড়ির প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি হাসপাতাল। এ এলাকায় সরকারি চিকিৎসাসেবায় আস্থা ফিরেছে বেশিরভাগ মানুষের।
দেশের অন্যান্য হাসপাতালের মতো অনেক সমস্যায় জর্জরিত ছিল গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। ২০০৮ সালে এ হাসপাতালটি ৩৩ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও এখনো জনবল মেলেনি। এ হাসপাতালটি উপজেলার অন্তত তিন লাখ মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অনিয়ম অবহেলা ও প্রয়োজনীয় লোকবলসহ বেশ কিছু যন্ত্রপাতির অভাবে ভোগান্তির শেষ ছিল না চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের। সামান্য অসুস্থ হলেও দেখা গেছে রোগীকে গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হতো।
জানা যায়, কিছুদিন আগেও রাতে হাসপাতালের আশপাশে মাদকসেবীদের আড্ডা আর দিনে বখাটেদের উৎপাত লক্ষ করা গেছে। এমনকি হাসপাতালের ভিতরে চরে বেড়াত গরু-ছাগল। হাসপাতালের পরিবেশ থাকত নোংরা। আশপাশে ছিল না তেমন কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ফলে চিকিৎসক ও নার্সরা হাসপাতালটিতে বেশিদিন থাকতে চাইতেন না। এমন পরিস্থিতিতে স্বভাবতই কোনো রোগী হাসপাতালে আসতে ইচ্ছুক হবেন না।
কিন্তু স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সুধী সমাজ, সরকারি কর্মকর্তা ও এলাকার সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সেটিই সম্ভব করে তুলেছেন ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. রফিকুজ্জামান।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুজ্জামান বলেন, আমাদের লক্ষ্য ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিকে চৌগাছা মডেল হাসপাতালের মতো আরেকটি মডেল হিসেবে দাঁড় করানো। এলাকার সকল শ্রেণির মানুষের সহযোগিতা পেলে খুব শিগগিরই এটি দেশের দ্বিতীয় মডেল হাসপাতাল হিসেবে গড়ে উঠবে।