
হাতপাখা কিনতে মানুষের ভিড়। ছবি: ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
টানা প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলা প্রচণ্ড তাপদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন। তীব্র গরমে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে লোডশেডিং। এতে কদর বেড়েছে হাতপাখার। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ২০ টাকার পাখা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। ঘুমও হারাম হয়ে গেছে পাখা তৈরির কারিগরদের। কারিগররা এখন দিনরাত সমান তালে পাখা তৈরির কাজে ব্যস্ত।
সরেজমিনে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌর এলাকার মেইন বাজারের কালীবাড়ি মোড়ে যেয়ে দেখা মিললো বেশ কয়েকটি পাখা বিক্রির পাইকারি ও খুচরা দোকানের।
কালীবাড়ি মোড় এলাকার পাখা বিক্রির দোকানদার রণজিৎ জানান, গরম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাতপাখার কদর শুরু হয়। তবে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে গত দুই সপ্তাহ ধরে কোটচাঁদপুরে ব্যাপক হারে হাতে তৈরি তালপাখার কদর বেড়েছে। গরমের শুরুতে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৭০ পিস পাখা বিক্রি হতো। আর এখন গরমের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় হাতপাখার চাহিদা প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে গেছে। এখন প্রতিদিন একেকটি দোকানে কমপক্ষে ২০০ থেকে ২৫০ পিস পাখা বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাইকারিতে পাখার দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে যেখানে বাঁশের হাতল দিয়ে তৈরি প্রতি পিস হাতপাখার দাম পড়তো ৯ থেকে ১০ টাকা। এখন সেই হাতপাখা পাইকারি প্রতি পিস ১৫ থেকে ১৬ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
বর্তমানে বাঁশের হাতল বা বাঁশের তৈরি হাতপাখা বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা আর তালের হাতল বা তালের তৈরি হাতপাখা বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।
কালীগঞ্জ মেইন বাসস্ট্যান্ডের দোকানদার বাদল জানান, এ বছর গরমের শুরুতেও হাতপাখার চাহিদা এত ছিল না। পাইকারি বাজারে দাম বৃদ্ধির কারণে খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।
কথা হয় উপজেলার কাকলেদাড়ি গ্রাম থেকে হাতপাখা কিনতে আসা মিজানুর রহমান মিঠুর সঙ্গে। তিনি জানান, একেতো প্রচণ্ড গরম, সেইসঙ্গে ঘন ঘন লোডশেডিং। শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের মাত্রা বেশি থাকায় গ্রাম-গঞ্জে এখন পাখার কদর তুঙ্গে। তাই শহরে পাখা কিনতে এসেছি। এসে দেখি দাম দ্বিগুণ। একটা পাখা কিনলাম ৫০ টাকা দিয়ে।
হাতপাখা কিনতে আসা পৌর সভার মহিলা প্যানেল মেয়র শারমিন আক্রান্ত সাথী জানান, রাতদিন মিলিয়ে এখন তাপমাত্রা সর্বোচ্চ। দুই টা ৪০ টাকার পাখা কিনলাম ৮০ টাকা দিয়ে। জিনিসপত্রের দাম দ্বিগুণ।
ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. শুভ্রা রানী দেবনাথ জানান, প্রচণ্ড গরমে মানুষের শরীর থেকে প্রচুর ঘাম ঝরে। ঘামের সাথে সাথে প্রচুর পরিমাণে পানি ও পটাশিয়ামসহ রক্তের থেকে লবণ বের হয়ে যায়। যার ফলে পানির চাহিদা অনেক বেশি বেড়ে যায়। যার ফলে হিট-স্টক হতে পারে। এজন্য প্রচুর পরিমাণে ডাবের পানি পান করতে হবে। এর পাশাপাশি লেবুর শরবত ও প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। এছাড়াও খাবার স্যালাইন খেতে হবে। এর মধ্যে ডাবের পানি সবথেকে বেশি উপকারী। তবে সবাইকে সাবধান থাকতে হবে এই রোদে প্রয়োজন ছাড়া যেন কেউ বাহিরে না যায়।