-644a915e3fc3e.jpg)
বজ্রপাত। ছবি: প্রতীকী
দেশের পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে অন্তত আটজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আজ বৃহস্পতিবার ( ২৭ এপ্রিল) বিকেলে দেশজুড়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ের সময়ে এসব ঘটনা ঘটে।
সম্প্রতিক দেশকালের জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর–
সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরা সদরের বিহারীনগর ও কলারোয়া উপজেলার পাঁচরকিতে পৃথক বজ্রপাতে দুই ব্যক্তি মারা গেছেন। আজ বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন-কলারোয়ার পাঁচরকি গ্রামের ৩৬ বছর বয়সী কামরুল ইসলাম ও সদর উপজেলার বিহারীনগর গ্রামের ৩৪ বছরের আব্দুল্লাহ মোল্যা।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বাড়ির পাশের বিল থেকে বোরো ধান উঠাচ্ছিলেন কামরুল ইসলাম। এসময় বজ্রবৃষ্টি শুরু হয়। বজ্রাঘাতে কামরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে মারা যান।
সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান, আগরদাড়ি এলাকার বিহারীনগর গ্রামের আব্দুল্লাহ মোল্যা মাঠ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। উঠানে আসলে বজ্রপাতে আব্দুল্লাহ গুরুতর আহত হন। কিছুক্ষণের মধ্যে তিনিও মারা যান।
রাজবাড়ী
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে সাইদুল মৃধা (৩২) নামে এক কৃষক যুবক বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তিনি উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের খালেক মৃধা পাড়ার মরহুম জামাল মৃধার ছেলে।
সাইদুলের দুলাভাই দবির উদ্দিন শেখ জানান, তার শ্যালক মাঠে তার জমিতে কাজ করছিলেন। এমন অবস্থায় ঝড় বৃষ্টি শুরু হলে দৌঁড়ে বাড়ি ফেরার সময় বজ্রপাতের শিকার হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহে বৃষ্টির হাত থেকে কেটে রাখা ধান বাঁচাতে গিয়ে বজ্রপাতে সুজন মন্ডল (৩০) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেল ৫টার দিকে মধুহাটি ইউনিয়নের কুবিরখালী পূর্ব মাঠে এঘটনা ঘটে। নিহত কৃষক সদর উপজেলার কুবিরখালী গ্রামের রমিজ উদ্দিন মন্ডলের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, বিকেলে ঝিনাইদহে কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়। এ সময় সুজন কেটে রাখা ধান বাঁচাতে বাড়ি থেকে পলিথিন নিয়ে বের হন। তবে ঠিক সেই সময় সেখানে বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।
স্থানীয় বাজার গোপালপুর ক্যাম্পের সেকেন্ড অফিসার এএসআই বদর উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করে করে জানান, সুজনের মরদেহ তার বাড়িতেই রয়েছে। এ ব্যাপারে সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় পৃথকস্থানে বজ্রপাতে দুই কিশোর নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরও দুই কিশোর। আজ বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরের দিকে এই ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- শ্যামপুরের গোপালনগর গ্রামের মো. আব্দুল কাদেরের ছেলে মো. শাহিন আলী (১৩) এবং শ্যামপুর শরৎনগর গ্রামের মো. হারুন আলীর ছেলে অসিম (১২)। একই ঘটনায় আহতরা হলেন- লছমানপুর গ্রামের রোজবুল ইসলামের ছেলে মো. নয়ন (১৩) ও শ্যামপুর গোপালনগর গ্রামের কাশেদের ছেলে মো. সরোয়ার (১৫)।
শ্যামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রবিউল ইসলাম জানান, তার ইউনিয়নের শরৎনগর ও গোপালনগরে কয়েকজন কিশোর বাগানের আম ব্যাগিং করছিল। দুপুর আড়াইটার দিকে বজ্রপাত হলে গোপালনগরে শাহিন এবং শরৎনগরে অপর এক কিশোর অসীম মারা যায়।
এছাড়াও গোপালনগরের ঘটনায় ২ কিশোর নয়ন ও সারোয়ার শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য স্থানীয়রা পাঠিয়েছে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শিবগঞ্জ থানার ওসি চৌধুরি জোবায়ের হোসেন।
মেহেরপুর
মেহেরপুরের মুজিবনগরে বজ্রপাতে মাঠে কাজ করতে থাকা এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামের বিদ্যাধরপুর বাউনদা মাঠে বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়। নিহত কৃষক শাহাবুদ্দিন (৪০) দারিয়াপুর গ্রামের স্কুল পাড়ার মৃত আলীমুদ্দীনের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দারিয়াপুর গ্রামের বিদ্যাধরপুর বাউনদা মাঠে নিজ জমিতে কাজ করছিলেন কৃষক শাহাবুদ্দিন। এসময় হঠাৎ বৃষ্টি এবং বাতাসের সাথে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এতে বজ্রাহত হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী রাসেল জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহতের মরদেহ দাফনের জন্য পরিবারকে অনুমতি দেয়া হয়েছে।
যশোর
যশোরের শার্শায় মাঠে ধান তোলার সময় বজ্রপাতে আজিজুল ইসলাম (৩৫) নামে এক কৃষক মারা গেছেন। আজ বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার পাড়ের কায়বা গ্রামের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। মৃত আজিজুল একই গ্রামের মৃত কামাল সরদার কিনুর ছেলে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, বৃষ্টিতে যেন ধান নষ্ট না হয় সেজন্য বিকালে আজিজুল তার ভাইসহ ৩/৪ জন ঠ্যাংগামারী বিলের মাঠে নিজেদের জমির ধান গোছাতে যান। তারা মাঠে ধান গোছানো অবস্থায় বজ্রপাত হয়। এতে আজিজুল আহত হন।
পাশে থাকা তার ভাই দেখে চিৎকার দেন। তখন স্থানীয়রা এসে তাদের উদ্ধার করে বাগআঁচড়ার জোহরা মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক আজিজুলকে মৃত ঘোষণা করেন।