ব্রহ্মপুত্র রক্ষায় হাঁটু জলে নেমে ‘মৃতের চিৎকার’

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৩, ১৮:০৯
-6454f1fd58524.jpg)
ময়মনসিংহে হাঁটু জলে নেমে ব্রহ্মপুত্র নদ রক্ষা কর্মসূচি। ছবি: ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ময়মনসিংহে ব্রহ্মপুত্র নদ রক্ষায় ‘মৃতের চিৎকার’ শীর্ষক ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
আজ শুক্রবার (৫ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের কাচারীঘাট এলাকায় হাঁটু জলে নেমে মানববন্ধন, মূকাভিনয়, গান ও কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে নদের করুণ চিত্র তুলে ধরা হয়।
আয়োজকদের পক্ষে সংস্কৃতি কর্মী শামীম আশরাফ জানান, ‘মৃতের চিৎকার’ মূলত ব্রহ্মপুত্র নদ রক্ষার কর্মসূচি। এই নদ খননের নামে যে প্রহসন চলছে তার প্রতিবাদ।
কর্মসূচিতে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, সংস্কৃতিকর্মী, রাজনৈতিক নেতারাও সংহতি প্রকাশ করে হাঁটু জলে নেমে প্রতিবাদ করেন।
প্রতিবাদ কর্মসূচির অংশ হিসেবে নদের মাঝে হাঁটু জলে একটি টেবিল রেখে তাতে বিভিন্ন ধরনের খাবার প্রদর্শন করা হয়। কিন্তু সেখানে ছিলো না কোনো খাবার পানি।
এ কর্মসূচিতে বিভিন্ন প্লে-কার্ড স্থান পায়। যার মধ্যে লেখা ছিলো ‘গাছ খাও, মাছ খাও, নদী খাও কেন’, ‘সাড়া দাও মৃতের চিৎকার’সহ বিভিন্ন দাবি।
এ আয়োজনের উদ্যোক্তা শামীম আশরাফ বলেন, শিল্পের মানুষের চিন্তা নিয়ে সমন্বিতভাবে ‘মৃতের চিৎকার’ আয়োজন করা হয়েছে। এই চিৎকার অনেকের কাছে হয়তো পৌঁছাবে না। কিন্তু কিছু মানুষ তবু আমরা দাঁড়াতে চাই প্রতিবাদে। এর আগেও আমরা নদ রক্ষায় কর্মসূচি পালন করেছি। এই নদটি যতদিন পর্যন্ত প্রাণ না ফিরে পাবে ততদিন আমাদের এই আন্দোলন চলবে।
কর্মসূচিতে অংশ নেয়া জেলা জনউদ্যোগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম চুন্নু বলেন, দখল, দূষণ আর পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে ২০১৯ সালের শেষের দিকে শুরু হয় খনন কাজ। প্রায় দুই হাজার ৭৬৩কোটি টাকা ব্যয়ে নদের ২২৭ কিলোমিটার খনন করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিওটিএ)।
তিনি বলেন, খননের পর যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের সংযোগস্থল জামালপুরের কুলকান্দি থেকে কিশোরগঞ্জের টোক পর্যন্ত নদটি ৩০০ ফিট প্রশস্ত ও শুস্ক মৌসুমে ১০ ফুট গভীর থাকবে এমনটি কথা ছিলো। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও কাঙ্খিত খনন হয়নি। যে নদ দিয়ে এ সময়ে লঞ্চ স্টিমার চলার কথা, সে নদ মানুষ হেঁটে পাড় হচ্ছে।
‘পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্যতা উন্নয়নে ড্রেজিং’ শীর্ষক প্রকল্পটি আগামী ২০২৪ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। পাঁচ বছর মেয়াদী প্রকল্পের প্রথম দুই বছর নদের ড্রেজিং এবং পরবর্তী তিন বছর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করার কথা ছিলো।
চলতি বছরের জুন-জুলাই থেকে ঢাকা পর্যন্ত জাহাজ চলার কথা ছিল। গেল বছর ময়মনসিংহ এক সভায় এমন কথা জানিয়েছিল ব্রহ্মপুত্র নদ খননের প্রধান প্রকল্প সমন্বয়কারী প্রকৌশলী খন্দকার রাকিবুল ইসলাম।
শুক্রবার আয়োজিত প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, জুলাই মাসে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকা পর্যন্ত জাহাজ চলবে। উদ্বোধনের জন্য মন্ত্রীর সিডিউল চাওয়া হয়েছে। প্রকল্পের টাকা ছাড় না হওয়ায় খনন কাজ চলছে ধীর গতিতে।