
সাম্মাম হাতে তরুণ উদ্যোক্তা মো. আনোয়ার হোসেন। ছবি: প্রতিনিধি
আরব দেশের মরুভূমির ফল হিসেবে খ্যাত সাম্মাম এবার বাংলাদেশের গারো পাহাড়ে চাষ হচ্ছে। শেরপুরের সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের এক তরুণ উদ্যোক্তা পরীক্ষামূলকভাবে এ ফল চাষে সফল হয়ে বাণিজ্যিকভাবে সাম্মাম চাষে আগ্রহী হয়েছেন। ইতোমধ্যে আরব দেশের ফল চাষের খবর পেয়ে বিভিন্ন স্থানের মানুষ তার ওই ফল বাগানে ভিড় করছেন এক নজর দেখতে।
জেলার কৃষি বিভাগ বলছে, মরুভূমির এ ফল চাষ সম্প্রতি বাংলাদেশের শুরু হলেও শেরপুরে এটি প্রথম। তবে ফলন দেখে মনে করা হচ্ছে উচ্চ মূল্যের এ সাম্মাম চাষ গারো পাহাড়ের পতিত জমিতে চাষাবাদে লাভবান ও আগ্রহ সৃষ্টি করবে স্থানীয় কৃষকদের।
কুমড়া গাছের মতো লতানো গাছ। গাছের ফাঁকে ফাঁকে ঝুলছে গোল গোল ফল। প্রায় প্রতিটি গাছেই ভরপুর ফল ও ফুল। বাঁশের বাতা আর নেট ব্যাগ বা জালের ফাঁকে ফাঁকে পুরো ক্ষেত যেন ফলে ভরে রয়েছে। সাম্মাম ফল খুবই পুষ্টি সমৃদ্ধ। বহির্বিশ্বে এ ফলের চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশে এটির প্রচলন এখনো কম।
এ ফলকে সৌদিতে সাম্মাম বলে, তবে বিভিন্ন দেশে এটি রক মেলন, সুইট মেলন, মাস্ক মেলন, হানি ডিউ নামেও পরিচিত। সাম্মামের দুটি জাত রয়েছে। একটি জাতের বাইরের অংশ সবুজ আর ভেতরের অংশ লাল, আরেকটি জাতের বাইরের অংশ হলুদ এবং ভেতরের অংশ লাল। তবে খেতে দুই ধরনের ফলই খুব মিষ্টি ও রসালো।
শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতি উপজেলার নককুড়া ইউনিয়নের গারো পাহাড়ের সীমান্তঘেঁষা গ্রাম গোমরা। এ গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা মো. আনোয়ার হোসেন প্রথমে ইউটিউবে দেখেন সাম্মাম ফল খুবই উচ্চমূল্যের একটি ফল। তাই তিনি এ ফল চাষে পরীক্ষামূলকভাবে স্থানীয় বীজ ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বীজ সংগ্রহ করে চলতি মাসের ফেব্রুয়ারি মাসে তার পৈতৃক ১০ শতক জমিতে রোপণ করেন।
মাত্র ৩০ দিনের মাথায় গাছে ফুল আসতে শুরু করে। এরপর পরাগায়ণের আরও ৪০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যেই ফুল থেকে ফল এবং সর্বশেষ এপ্রিল মাসের শেষ দিকে ফল পাকতে শুরু করেছে। ফলনও হয়েছে বেশ। আনোয়ারের এ ফল চাষে এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে মাত্র ২০ হাজার টাকা। ফল বিক্রি করার টার্গেট রয়েছে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। প্রতিটি ফল দেড় থেকে দুই কেজি ওজনের হয়েছে। পাইকারি বাজার মূল্য ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি হিসেবে প্রতিটা ফল ২ থেকে ৩শ টাকায় বিক্রি করা যাবে বলে তার ধারণা।
এ বিষয়ে ঝিনাইগাতি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. হুমায়ুন দিলদার জানান, বর্তমানে পুষ্টি সমৃদ্ধ ফলমূল এবং আধুনিক চাষাবাদে তরুণরা এগিয়ে আসছে।