
বহিষ্কৃত বিএনপি নেতারা। ছবি: প্রতিনিধি
কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নেওয়া বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের ১২ নেতাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত নেতারা কাউন্সিলর পদের প্রার্থী।
সোমবার (২২ মে) বিকেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির স্বাক্ষরিত এক নোটিশের মাধ্যমে তাদের বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়।
বহিষ্কৃত নেতারা হলেন- কক্সবাজার জেলা কৃষক দলের আহবায়ক আশরাফুল হুদা সিদ্দিকী, জেলা যুবদলের যুগ্ম-সম্পাদক মো. আমিনুল ইসলাম, কক্সবাজার পৌর মৎস্যজীবী দলের সভাপতি এম জাফর আলম হেলালী, জেলা বিএনপির সদস্য এস আই এম আকতার কামাল আজাদ, কক্সবাজার পৌর শ্রমিক দলের সভাপতি আবছার কামাল, সাধারণ সম্পাদক ওসমান সরওয়ার, জেলা মহিলা দলের সভাপতি নাসিমা আকতার, দপ্তর সম্পাদক জাহেদা আকতার, কক্সবাজার পৌর যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক সাইফুল ইসলাম, জেলা যুবদলের প্রচার সম্পাদক শাহাব উদ্দিন, সদস্য ওমর সিদ্দিক এবং কক্সবাজার পৌর যুবদলের সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুন।
নোটিশে বলা হয়, কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা দলীয় সিদ্ধান্তের পরিপন্থী। এ বিষয়ে ২০ মে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হলেও কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দেওয়া হয়নি। দলীয় সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনাকে অবজ্ঞা করায় গঠনতন্ত্রের বিধান অনুযায়ী তাদের দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করার বিষয়টি দলের গুম-খুন ও নিপীড়নের শিকার হওয়া নেতাকর্মীদের পরিবারের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়। বহিষ্কারের সত্যতা নিশ্চিত করে কক্সবাজার জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ বদরী বলেন, ২৫ মে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় নির্ধারিত রয়েছে। সেদিন বহিষ্কৃত নেতাদের কেউ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিলে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ করা হবে।
বহিষ্কৃত হওয়া নেতাদের মধ্যে চারজন গত নির্বাচনে পৌরসভার কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। এর মধ্যে ৭ নম্বর ওয়ার্ডে পরপর তিনবার নির্বাচিত হন আশরাফুল হুদা। তিনি বলেন, বহিষ্কারাদেশ এখনো তার হাতে পৌঁছায়নি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দিয়েছি, বৈধও হয়েছে। ২৫ মে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিন রয়েছে। একদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত, অন্যদিকে ভোটারদের চাপ সব মিলিয়ে ভালো সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করব।
নাসিমা আকতার পৌরসভার সংরক্ষিত ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। বহিষ্কারের খবর জানা নেই দাবি করে নাসিমা বলেন, ‘মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে যদি জানতাম দলের নিষেধাজ্ঞা আসবে, তাহলে প্রার্থী হতাম না। এখন পুরো মাঠ চষে বেড়ানো হয়ে গেছে। জনগণকে সেবা দিয়েছি, কাজ করেছি অনেক। এখন দল যেমন ছাড়তে পারব না, জনগণও ছাড়তে পারব না। দেখা যাক, পরিস্থিতি কোনো দিকে গড়ায়।
ওসমান সরওয়ার বলেন, জনগণের চাপে তিনি প্রার্থী হয়েছেন। দলের সিদ্ধান্তে এখন নির্বাচন বর্জন করলে মানুষ তার প্রতি আস্থা ও আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।
আগামী ১২ জুন কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে ৬ জন, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১৬ জন এবং কাউন্সিলর পদে ৬১ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, ২৫ মে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার এবং ২৬ মে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে।