টাঙ্গাইলে স্কুল শিক্ষার্থীদের নিয়ে মুজিববর্ষ উদযাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২০, ২১:৫৯

ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে স্কুল ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়েই উদযাপিত হলো বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবার্ষিকী।
উপজেলার পাইলট সরকারি উচ্চ বালক ও বালিকা বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন কিন্ডার গার্ডেন স্কুলের কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে হয় অনুষ্ঠানের কেক কাটা আর শোভাযাত্রা।
মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) থেকে সরকার করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করলেও কর্তৃপক্ষের অতি উৎসাহে উপজেলার ওই স্কুল শিক্ষার্থীদের অনুষ্ঠানে যোগদান করানোর অভিযোগ তুলেছেন অভিভাবকরা।
অভিভাবকদের অভিযোগ, করোনা ভাইরাস নিয়ে এমনিতেই খুব আতঙ্কে রয়েছি আমরা। তবে সরকারিভাবে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণাটি আসায় শিশুদের নিয়ে এই শঙ্কাটা কিছুটা হলেও কমেছে আমাদের। এরপরও সরকারি ওই নির্দেশনা অমান্য করে আমাদের উপজেলার বিদ্যালয়ের প্রধানরা শিক্ষার্থীদের অনেকটাই বাধ্য করে ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না শর্তে কয়েকজন অভিভাবক বলেন, স্থানীয় এমপি, পৌর মেয়র আর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রিয়ভাজন হওয়ার লোভে শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির বিষয়টি ভাবেননি ওই প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ওই অভিভাবকরা।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে আয়োজিত শত পাউন্ড কেক কাটা অনুষ্ঠানে টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোটমনির, ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌরসভার মেয়র মাসুদুল হকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ভূঞাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাল মাহমুদ মিয়া জানান, সরকারি নির্দেশনা জানা সত্ত্বেও দিবসটি পালন উপলক্ষে তিনি স্কুলের কিছু সংখ্যক ছাত্রী নিয়ে কেক কাটা ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করেছেন। তবে ওই ছাত্রীদের নিয়ে তিনি দিবসটির শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেননি। এছাড়াও সকাল ১০টার দিকে ওই ছাত্রীদের স্কুল থেকে বিদায় দেন বলেও জানান তিনি।
ভূঞাপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দিনের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে অসংখ্যবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
ভূঞাপুর উপজেলা কিন্ডার গার্ডেন স্কুল এসোসিয়েশনের সভাপতি খায়রুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান, আগেই কেকের অর্ডার দেয়া হয়েছিল বলেই অনুষ্ঠানে কিছু সংখ্যক ছাত্রছাত্রীকে উপস্থিত করা হয়েছিলো। তবে ওই শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক অনুষ্ঠানে আনা হয়নি বলেও জানান তিনি।
তবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম জানান, আগামী ১৮ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দিয়ে একটি পরিপত্র জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এছাড়াও আজকের অনুষ্ঠানে অল্পপরিসরে মাত্র ২৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে অনুষ্ঠান পালনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন পারভীন বলেন, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের সরকারি নির্দেশনা পাওয়া মাত্রই শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সকল প্রতিষ্ঠান প্রধানদের অবগত করেছেন তিনি। তবে এরপরও যদি কোন প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে আর ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে কোন অনুষ্ঠান করে থাকেন তাহলে সে বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।