কুচিয়া মাছ। ছবি: পাবনা প্রতিনিধি
এক সময় কুচিয়া মাছ সংগ্রহ করে সচ্ছলভাবে দিন পার করলেও তা এখন শুধুই অতীত। চায়না দোয়ারীসহ বিভিন্ন অবৈধ জাল দিয়ে অবাধে খালে ও বিলে মাছ শিকার করায় চরম বিপাকে পড়েছে স্থানীয় কুচিয়া মাছ শিকারিরা। বিদেশে ব্যাপক চাহিদা থাকলেও স্থানীয় বাজারে আশানুরূপ দাম না পেয়ে পেশা বদল করছে অনেকেই।
পাবনা জেলার চলনবিল, ভাদুর বিল, শুতের বিল, গাজনার বিল, পচাগারী বিল, রুহুল বিল, চতরার বিলসহ বিভিন্ন বিলঅঞ্চল থেকে কুচিয়া মাছ শিকার করে শিকারিরা। পরে শিকারিরা সেই মাছ বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন আতাইকুলা থানাধীন কুচিয়ামোড়া বাজারে। পরবর্তীতে আড়ৎদারদের মাধ্যমে কুচিয়া মাছ প্যাকেটজাত করে দেশের বিভিন্ন এলাকাসহ রপ্তানি করা হয় বিদেশেও।
এ বিষয়ে কুচিয়া মাছ শিকারি মো. শ্রী অর্মীত্র ও মৃদুল জানান, ভাই সকালে বাসা থেকে বাহিরে গিয়ে বিভিন্ন মাঠে, বিলে, পুকুরে ও খাল বিলে বরশি দিয়ে এই কুচিয়া মাছ ধরে আনি। বিলে সব চেয়ে বেশি কুচিয়া পাওয়া যায় তবে চায়না জালের জন্য মাছ পাওয়াই কষ্ট, এখন আর আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। খুব কম পাওয়া যায় এখন। বর্তমান বাজারে কুচিয়া মাছ ধরে কোন দিন ২০০ টাকা কেজি আবার কোন দিন ১০০ টাকা কেজি বিক্রি করি। আবার কোন দিন খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হয়।
কুচিয়া শিকারিরা অভিমান করে বলে, বর্তমান সময়ে সব জিনিসের দাম বেশি আমাদের চলাই কষ্ট হয়ে গেছে। আবার অনেকে এখন কুচিয়া মাছ ধরা বাদ দিয়ে মাঠে কাজ করছে। আবার কেউ ভ্যান চালাচ্ছেন।
এ বিষয়ে কথা হয় কুচিয়া মোড়া বাজারের আড়ৎদার মো. মুঞ্জুরুল হকের সাথে তিনি জানান, মাঠে থেকে শিকারিরা ধরে নিয়ে আসে আমার আড়তে, আমি তাদের কাছ থেকে কিনে রাখি এবং বেশি হলে প্যাকেট করে ঢাকায় পাঠিয়ে দেই। সেখান থেকে বড় মহাজনেরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠায়। তবে শুনেছি বিদেশে বেশি বিক্রি হয়। বিদেশে এই মাছের চাহিদা থাকলেও আমরা সেরকম দাম পাই না। আমাদের সরকারীভাবে সহযোগিতা করলে আমরা লাভবান হতে পারবো।
এ বিষয়ে পাবনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, জেলার বিভিন্ন কুচিয়া মাছ শিকারের সাথে জড়িত খুদ্রনিগোষ্ঠী সদস্যদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। আর চায় না জালের উপর মাঝে মাঝে অভিযান পরিচালনা করা হয়।