বরিশাল সিটি নির্বাচন: পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে মেয়র প্রার্থীদের

খান রুবেল, বরিশাল
প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৩, ১৫:১৭

প্রচারণায় ব্যস্ত মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। ছবি: বরিশাল প্রতিনিধি
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশগ্রহণ করা সাত মেয়র প্রার্থী চালিয়ে যাচ্ছেন নির্বাচন প্রচার-প্রচারণা। তারা সাকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গণসংযোগ, উঠোন বৈঠক, লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এসময় নির্বাচিত হলে নগর উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন প্রার্থীরা।
তবে ১২ জুন অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন নিয়ে শঙ্কাও প্রকাশ করছেন আওয়ামী লীগ বাদে বাকি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। তারা বলছেন, ভোটের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে নির্বাচনে ততটাই ভীতসন্ত্রস্ত পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। তাছাড়া লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হওয়ার দিকে যাচ্ছে বলেও দাবি করছেন মেয়র প্রার্থীরা।
গণসংযোগকালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম সাংবাদিকদের বলেন, মনে হচ্ছে ধীরে ধীরে নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্টের দিকেই যাচ্ছে। যেমন আমাদের কিছু লোককে হয়রানি করার খবর এসেছে। এরপর টুপি-দাড়ি দেখে আমাদের লোকজনকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে কোথায় বাড়ি, আসছেন কেন? অথচ, নির্বাচন আচরণবিধির মধ্যে কোথাও লেখা নেই এই শহরের বাইরের কেউ ভোট চাইতে পারবে না, আসতে পারবে না।
তিনি বলেন, আমি মনে করি নির্বাচন আচরণবিধির মধ্যে যা আছে, সেই দিকে প্রশাসনের লক্ষ্য করা উচিত। নির্বাচনের বিধি ছাড়া আমি যদি কোনো কাজ করি তাহলে বলবে। কিন্তু বিধির মধ্যে কাজ হলে অতি উৎসাহী হয়ে আমাদের বাধা দেওয়ার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। আমি প্রশাসনের কাছে দাবি করবো, বরিশালের নির্বাচনের দিকে গোটা দুনিয়া তাকিয়ে আছে। কাজেই নির্বাচন যদি কোনো অবস্থায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়, ক্লিন না হয় এবং যদি গ্রহণযোগ্য না হয়, তাহলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আন্দোলনের অবস্থা ভিন্ন দিকে মোড় নিবে বলে আমি মনে করি।
জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। তবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এখনো নিশ্চিত হয়নি। আওয়ামী লীগের যারা নেতাকর্মী রয়েছেন, তারা বিভিন্নভাবে ভীতসন্ত্রস্ত পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগের বিশেষ নেতা এখানে এসে নৌকার লোগো লাগিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে। ওই নেতা সারা বরিশালের বিভিন্ন জেলা থেকে লোক এনে একটা ভীতসন্ত্রস্ত পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। তাদের উদ্দেশ্য হলো জনগণ যেন ভোটকেন্দ্রে না যায়। এ ধরনের অবস্থা যদি তারা চালিয়ে যেতে থাকে, জনগণ সম্মিলিতভাবে তা প্রতিহত করবে। সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, তারা যেন এখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডটা নিশ্চিত করেন। আর না হলে সারা বাংলাদেশে এই ভোট চুরির বিপক্ষে যে গণআন্দোলন শুরু হবে, সেই গণআন্দোলনে সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে।
অপরদিকে জাকের পার্টির প্রার্থী মিজানুর রহমান বাচ্চু বলে, প্রচারণায় নেমে যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছি। তবে বহিরাগতদের কিছুটা উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। এদের প্রতিরোধ করতে প্রশাসনের প্রতি দাবি তার।
এদিকে নির্বাচনে প্রচারণায় বাধা সৃষ্টির লক্ষ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপণের তিন কর্মীকে আটকের অভিযোগ করেছেন এই প্রার্থী। তিনি বলেন, রমজান, মোনায়েম খান এবং সৈয়দ রফিকুল ইসলাম মন্টু নামের যে তিনজন কর্মীকে আটক করা হয়েছে তাদেরকে এক বছর আগে একটি গায়েবী মামলায় আসামি দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠিয়েছে।
তবে নির্বাচন ঘিরে এখন পর্যন্ত সবকিছুই স্বাভাবিক রয়েছে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত। তিনি বলছেন, প্রচারণায় ভোটারদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। আশা করছি সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হবে। আর জনগণ উন্নয়নের স্বার্থে অবশ্যই নৌকাকে বিজয়ী করবে।