বরিশাল সিটি নির্বাচনে নৌকার নির্বাচন পরিচালনায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় টিমের প্রধান আবুল হাসানাত আবদুল্লাহকে নিয়ে বিস্ফোরক বক্তব্য করে দল থেকে বহিষ্কার হয়েছেন ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শরীফ মো. আনিসুর রহমান ওরফে আনিসু শরীফ।

গতকাল রবিবার (৪ জুন) রাতে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক হেমায়েত উদ্দিন সুমন সেরনিয়াবাত স্বাক্ষরিত পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

আনিস শরীফ বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য ছিলেন আনিস শরীফ। বর্তমানে তিনি বিসিসির ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর। বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ বিরোধী ১০ কাউন্সিলরের একজন তিনি। বরিশালের রাজনীতিতে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম অনুসারী হিসেবে পরিচিত আনিস শরীফ।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সংগঠন বিরোধী কার্যক্রম এবং শতভাগ মিথ্যা কথা প্রচার করেছেন আনিস শরীফ। এজন্য তাকে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো।

এর আগে রবিবার দুপুরে নগরীর ধানগবেষণা রোড এলাকায় নিজ বাড়িতে নির্বাচনী কার্যালয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর প্রার্থী এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাফিন মাহমুদ তারিকের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন শরীফ মো. আনিসুর রহমান।

এসময় তিনি বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য, নির্বাচন পরিচালনা টিমের প্রধান ও দলীয় প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাতের ভাই আবুল হাসানাত আবদুল্লার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক বক্তব্য দেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আওয়ামী লীগের নৌকা ডোবাতেই ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীকে ঢাকায় ডেকে নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামিয়েছেন আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। এজন্য ওই প্রার্থীকে হাসানাত দিয়েছেন ৩ কোটি টাকা।

এমনকি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে তাদের অনুসারী নেতাদের টাকা দিয়ে নৌকার পরাজয় নিশ্চিত করতে কাজ করছেন বলেও মন্তব্য করেন এই কাউন্সিলর প্রার্থী।

রবিবার দুপুরে তিনি নিজ বাড়িতে তার প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর প্রার্থীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন ডেকে গণমাধ্যমের সামনে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহকে নিয়ে এমন বিষদগার করেন আনিছ শরীফ।

তবে এমন বিস্ফোরক বক্তব্যের প্রমাণ দেখাতে না পারলেও তিনি বলেন, বিষয়টি আলোচিত। ইতিপূর্বে এ নিয়ে মিডিয়ায় অনেক বক্তব্য এসেছে। তবে কোন মিডিয়ায় কে বক্তব্য দিয়েছে তা জানাতে পারেননি আনিস শরীফ।

এদিকে আনিস শরীফের এমন বিস্ফোরক বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়েন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। তারা বলছেন একজন প্রবীণ রাজনীতিককে নিয়ে তথ্য-প্রমাণ ছাড়া এমন বিষদগার নিজের অস্তিত্বের জানান দেয়া ছাড়া কোন সুফল বয়ে আনবে না।

তার এমন বিস্ফোরক বক্তব্যের সমালোচনা করে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেছেন, আনিসুর রহমান শরীফ একসময় আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর হাত ধরে রাজনীতি করেছে। সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধাও নিয়েছেন তিনি। এমনকি তিনি যে কাউন্সিলর হয়েছেন সেখানেও অবদান ছিল আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর।

অথচ নির্বাচনকালীন তার এমন বক্তব্য দলের মধ্যে, এমনকি ভাইয়ে ভাইয়ে বিরোধ সৃষ্টির কারণ হতে পারে। তার এ ধরনের বক্তব্য মোটেই কাম্য নয়। এগুলো বলার জন্য পেছন থেকে তাকে কেউ উসকে দিলে তাদেরকেও চিহ্নিত করে ব্যবস্থাগ্রহণ করা উচিত।