
মজুদ ধান বিক্রি না হওয়ায় অর্থসঙ্কটে কৃষক। ছবি: সংগৃহীত
জয়পুরহাটে ধানের দাম কমায় লোকসানের আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক। বাজারে দিন দিন ধানের আমদানি বাড়লেও চাহিদা না থাকায় ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না কৃষক। তাদের অভিযোগ, মিল মালিকরা না কেনায় কমে যাচ্ছে ধানের দাম। আর মিল মালিকরা বলছেন, আগের মজুদ ধান বিক্রি না হওয়ায় অর্থসঙ্কটে তারা ধান কিনতে পারছেন না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এ বছর জেলায় ৬৯ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। যা থেকে এবার ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ২২ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন এবং চালের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮১ হাজার ৬৮৬ মেট্রিক টন। ধারদেনা করে এ মৌসুমে কৃষকরা ইরি-বোরো ধানের আবাদ করেছেন। কাটা-মাড়াইয়ের পর ঋণ পরিশোধের জন্য হাটে নিয়ে আসছেন ধান।
এ বছর সার, তেল, শ্রমিক ও কীটনাশকের দাম বাড়ায় ফসল উৎপাদনের খরচ বেড়েছে। কিন্তু ধানের দাম কমে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। টাকার প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে লোকসানে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।
সরেজমিনে হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দুই সপ্তাহ আগেও প্রতি মণ কাটারি জাতের ধান ১২৫০ থেকে ১৩০০ টাকা, জিরাশাইল ১২৫০ থেকে ১২০০ টাকা, মোটা জাতের আতপ ১১৫০ থেকে ১১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অথচ বাজারে বর্তমানে সেই কাটারি জাতের ধান প্রতি মণ ১০৫০ থেকে ১১০০ টাকায়, জিরাশাইল ১০০০ থেকে ১০৫০ টাকা, মোটা আতপ ৯৫০ টাকা। জয়পুরহাট সদর উপজেলার পুরানাপৈল এলাকার কৃষক আনিছুর রহমান বলেন, সপ্তাহে ধানের দাম প্রতি মণ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কমেছে। আবার প্রতি বিঘায় ধান হচ্ছে ২২ মণ থেকে ২৬ মণ। উৎপাদন খরচ হয়েছে ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা।
একদিকে ধানের আমদানি বাড়ছে, অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করছে। আবার আবহাওয়া অনুক‚লে না থাকলে আরও লোকসানে পড়তে হবে। জয়পুরহাট সদর উপজেলার ধারকী সিঅ্যান্ডবি চারমাথার ধান ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান রাশেদ বলেন, অনেক মিলারের কাছেই আগের মৌসুমের ধান মজুদ থেকে গেছে। ফলে তারা অর্থসংকটের কারণে ধান কিনতে পারছেন না। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক রাহেলা পারভীন বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুক‚ল থাকায় এখন পর্যন্ত বোরোর ভালো আবাদ হয়েছে।