Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

তিস্তার পাানি বিপৎসীমার ৩৫ সে.মি ওপরে, পানিবন্দি ৫ হাজার পরিবার

Icon

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৩, ২০:৩২

তিস্তার পাানি বিপৎসীমার ৩৫ সে.মি ওপরে, পানিবন্দি ৫ হাজার পরিবার

ছবি: প্রতিনিধি

উজানের ঢল ও ভারি বর্ষণে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে তিস্তার বাম তীরের বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানির চাপে ডালিয়া ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। স্থায়ী বন্যার আশঙ্কা করছেন তিস্তা পাড়ের মানুষ।

আজ বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা থেকে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানিপ্রবাহ বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

গতকাল বুধবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যার পর থেকে তিস্তায় পানি বাড়তে থাকে। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। পরে সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপরে, দুপুর ১২টায় কিছুটা কমে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপরে, বিকাল ৩টায় আবার কিছুটা বেড়ে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। কিন্তু একই পয়েন্টে বিকালে পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে। পরে সন্ধ্যা ৬টার রেকর্ডে ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

এর ফলে জেলার পাটগ্রাম, হাতিবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার নতুন নতুন এলাকায় পানি প্রবেশ করছে। ইতিমধ্যে পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। পানিতে ডুবেছে চরাঞ্চলের বাড়িঘর ও রাস্তা ঘাট। চরাঞ্চলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ি যেতে নৌকা ব্যবহার করতে হচ্ছে।

তিস্তার নদীর পানি বৃদ্ধিতে  জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউপির পাটিকাপাড়া,হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, কালমাটি, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, বড়বাড়ি, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পুরো জেলায় প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে ফসলের ক্ষেত রাস্তাঘাট ও পুকুর।

পশুপাখি নিয়ে বন্যার্তরা উচু স্থানে অবস্থান নিতে শুরু করেছেন। অনেকেই উচু স্থানে চুলা জ্বালিয়ে রান্নার কাজ সারছেন। নলকূপ, টয়লেটে পানি উঠায় বিশুদ্ধ পানি সংকট ও স্যানিটেশন সমস্যায় পড়ছেন তারা।

গোবর্ধন এলাকার জামাল মিয়া বলেন, সকাল থেকেই পানি বাড়ছে, বারিঘর ডুবে গেছে।

মহুবর রহমান বলেন, সকাল থেকেই পানি হাটু সমান তাই খাটের উপর চুলা তুলে রান্না বান্না কাজ করতে হচ্ছে। গরু-ছাগল বাঁধে নিয়ে গিয়ে রাখছি। কোনরকমে খাটের উপরে উঠে থাকতে হচ্ছে।

মহিষখোচা এলাকার মানজেদুল ইসলাম জানান, রাত থেকে পানি বাড়ছে তিস্তায়। নদীপাড়ের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে ফসলের ক্ষেত রাস্তাঘাট ও পুকুর। চরাঞ্চলে হেঁটে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। 

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, পানি বিপৎসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে, ফলে আরও পানি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক বন্যার খোঁজ রাখছি। জেলায় দুর্যোগকালীন ৪৫০ মেট্টিক টন চাল ও সাত লাখ টাকা বরাদ্দ আছে। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট ইউএনও এবং পিআইওর মাধ্যমে ১১০ মেট্টিক টন চাল বিতরণ চলছে। আবারও তালিকা করে বরাদ্দ দেওয়া হবে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫