
সুন্দরবন। ছবি: বাগেরহাট প্রতিনিধি
সুন্দরবনের আলীবান্দা এলাকায় দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে নতুন পর্যটন স্পট নির্মাণ কাজ। এ বছরের শেষের দিকে নতুন এই দর্শনীয় স্থানটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য।
লোকালয় থেকে স্পিডবোটে মাত্র ১০ মিনিট এবং ট্রলারে ৪০ মিনিটের পথ হওয়ায় সুন্দরবন ভ্রমণ আরও সহজ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এর ফলে শরণখোলা ও সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটবে। তৈরি হবে নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান ও কর্মসংস্থান।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শরণখোলা উপজেলার শরণখোলা বাজার থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আলীবান্দা নামক স্থানে এই ইকো টুরিজিম সেন্টারটি নির্মাণ করা হবে। গেল বছরের প্রথম দিকে এখানে নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। কাজ প্রায় শেষের দিকে। সরকারি অর্থায়নে এই ইকো ট্যুরিজম সেন্টারে পর্যটকদের জন্য খাঁচার মধ্যে হরিণ থাকবে, গোলঘর, ফুটট্রেলার, পাবলিক শৌচাগার, ওয়াচ টাওয়ার ও রাস্তা করা হবে। এক কথায় পূর্ণাঙ্গ একটি দর্শনীয় স্থান হবে এটি। সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য এই স্থানটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হলে শরণখোলা থেকে সুন্দরবনে যাওয়া পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলে দাবি স্থানীয়দের।
খুলনার রূপসী বাংলা ট্যুরিজমের স্বত্বাধিকারী কাজী মনজুর-উল-আলম বলেন, সুন্দরবনে পর্যটককেন্দ্র বাড়ায় পর্যটকদের বন দেখার আরও সুযোগ বাড়ছে। বন্যপ্রাণীদের অবাধ বিচরণের মধ্যে নিরিবিলি পরিবেশে বনের সৌন্দর্য অবলোকনের সুযোগ সৃষ্টি হবে নতুন পর্যটনকেন্দ্রে। এতে পর্যটক যেমন বাড়বে তেমনি আমাদেরও ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। সরকারের বাড়বে রাজস্ব।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর-ই-আলম সিদ্দিকি বলেন, শরণখোলা এমন একটা উপজেলা, যার চারপাশে নদী ও বন। কিন্তু এখানে পর্যটন শিল্পের তেমন কোনো বিকাশ ঘটেনি। পর্যটন শিল্পের বিকাশের জন্য আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলেশ্বর নদীর তীরে রিভারভিউ ইকোপার্ক করেছি। যেখানে প্রচুর দর্শনার্থী আসতে শুরু করেছে। আলীবান্দা যখন চালু হবে, তখন উপজেলা সদরের এই ইকোপার্ক থেকে সরাসরি আলীবান্দা ইকোট্যুরিস্ট সেন্টারে যাওয়ার জন্য অনেক ব্যবস্থা তৈরি হয়ে যাবে। তখন একসঙ্গে সুন্দরবন ও রিভারভিউ ইকোপার্ক দেখে গন্তব্যে ফিরতে পারবেন দর্শনার্থীরা। যার ফলে এই উপজেলার পর্যটন শিল্পের ব্যাপক উন্নতি ঘটবে। কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। সুন্দরবন ও রিভারভিউ ইকোপার্কের ওপর ভর করে শরণখোলার অর্থনীতি বদলে যাবে বলে মন্তব্য করেন উপজেলা প্রশাসনের এই শীর্ষ কর্মকর্তা।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, ভবিষ্যতে সুন্দরবনে ইকো ট্যুরিজম উন্নয়ন করার জন্য সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে নতুন চারটি ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র তৈরির কাজ শুরু করেছি। আলীবান্দা ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্রের কাজ বেশির ভাগ শেষ হয়েছে। এ বছরের শেষের দিকে আমরা এই কেন্দ্রটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেব। এর ফলে শরণখোলা দিয়ে সুন্দরবনে যাওয়া দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়বে।
তিনি বলেন, এখানে পর্যটকরা যেন হেঁটে হেঁটে বন দেখতে পারেন সে জন্য হাঁটার রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। পাবলিক টয়লেট, পন্টুন, বসার বেঞ্চ, বৃষ্টি হলে বসার জন্য গোল ঘর হচ্ছে। কাজ শেষ হলে, খুবই আকর্ষণীয় হবে।