Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে কেএনএফের সাথে আলোচনা শুরু

Icon

বান্দরবান প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২৩, ১৯:০৮

পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে কেএনএফের সাথে আলোচনা শুরু

ফাইল ছবি

পাহাড়ে সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে সংঘাতের জেরে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য প্রতিষ্ঠা হওয়া ‘শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি ও কেএনএফের’ মধ্যে ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল বুধবার (১৯ জুলাই) বেলা এগারটায় শান্তি প্রতিষ্ঠার কমিটির সাথে পাহাড়ে সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফের সাথে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয় বলে জানিয়েছেন ‘শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি’।

শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির মুখপাত্র ও বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য কাঞ্চনজয় তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, আমরা শান্তির প্রস্তাব দিয়েছি। তারাও শান্তি চাই বলেছে। তাদের পক্ষ থেকে কতকগুলো রিকোয়েস্ট ছিল। আমরা বলেছি সেগুলো সরকারের কাছে পৌঁছে দেব। তারা বলেছে সংলাপচলাকালীন কেউ যাতে সংঘাত ও অপহরণের মত ঘটনা না ঘটায়। তারা পর্যটনসহ বেশ কিছু বিষয়েও আপত্তি জানিয়েছে। তাদের আপত্তির বিষয়গুলো সরকারের কাছে তুলে ধরা হবে।

‘‘সকাল এগারটা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত দুই ঘন্টাব্যাপী কেএনএফর সাথে অত্যন্ত সৌহাদ্যপূর্ণ ও আন্তরিকতার সাথে সুন্দরভাবে আলোচনা হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে কেএনএফের সাধারণ সম্পাদক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুনয়ার নেতৃত্বে আরো তিন-চারজন ছিলেন। তারা বাকী তিনজনের পরিচয়গুলো দেননি। শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির ১২ জন সদস্য ছিলাম আমরা। আলোচনা শুরু হয়েছে মাত্র। এই শান্তির সংলাপ চলমান থাকবে।’’

২০২২ সালের শুরুর দিকে বান্দরবানের রুমা উপজেলায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামে একটি সশস্ত্র সংগঠনের কথা সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানা যায়। বম, পাংখোয়া, লুসাই, খিয়াং, খুমি ও ম্রোদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে বলে দাবি করা হলেও সেখানে শুধু বম জনগোষ্ঠীর স্বল্পসংখ্যক লোকজন রয়েছে। যার কারণে সংগঠনটি পাহাড়ে ‘বম পার্টি’ নামে পরিচিতি পায়।

কেএনএফের ফেসবুক পেইজে তারা জানায়, রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি, বরকল, জুরাইছড়ি, বিলাইছড়ি ও বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি, লামা ও আলীকদমসহ নয়টি উপজেলা নিয়ে ‘কুকি-চিন রাজ্য’ হিসেবে গঠন করা হবে। পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সশস্ত্র সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন তারা।

পার্বত্য চট্টগ্রামে বান্দরবান জেলায় কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ); যা ‘বম পার্টি’ নামে পরিচিত এই সশস্ত্র সংগঠন অর্থের বিনিময়ে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ সদস্যদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় বলে গত বছর অক্টোবর মাসে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে জানায় র‌্যাব।

এরপর গত বছর ১৭ অক্টোবর থেকে জঙ্গিও কেএনএফ সদস্যদের বিরুদ্ধে রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার অভিযান চালায় র‌্যাব ও সেনা সদস্যের যৌথ বাহিনী। পরবর্তীতে এ অভিযান চালানো হয় থানচি উপজেলাতেও। ইতিমধ্যে অভিযান চালাতে গিয়ে নিহত হয়েছে সেনাবাহিনীর বেশ কিছু সদস্যও। সংঘাতের জেরে আতঙ্কে ভারতের মিজোরামে পালিয়ে যায় বম জনগোষ্ঠীর পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষ।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের কারণে কয়েক দফা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়িয়ে রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি ও আলীকদম উপজেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশী-বিদেশী পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। পরে আলীকদম উপজেলায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। পর্যায়ক্রমে ১৪ জুলাই থেকে রুমা ও থানচি দুই উপজেলাকে পর্যটক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থেকে তুলে নেওয়া হয়। তবে ভ্রমণের জন্য বেশ কিছু নিয়ম আরোপ করা হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। কিন্তু রোয়াংছড়ি উপজেলায় দেশী-বিদেশী পর্যটক ভ্রমণে এখনো নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫