
কক্সবাজারে আটক আন্তর্জাতিক অপহরণ চক্রের ৩ সদস্য। ছবি: কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ থেকে কৌশলে মানুষ অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়কারী আন্তর্জাতিক চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে এপিবিএন। একই সঙ্গে অপহরণের পর মিয়ানমারে পাচার করে জিম্মি করে রাখা এক রোহিঙ্গাকে কৌশলে ফেরত এনে উদ্ধার করা হয়েছে।
এপিবিএন বলছে, উখিয়া-টেকনাফের একটি সংঘবদ্ধ চক্র কৌশলে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় করে আসছে। অনেক ক্ষেত্রে মুক্তিপণ আদায়ের পর কাউকে কাউকে ছেড়ে দিলেও হত্যা করা হয় অনেককে। এই চক্রের সঙ্গে আন্তর্জাতিক একটি চক্র জড়িত। যারা অপহৃতদের মিয়ানমারে নিয়ে গিয়ে অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে আদায় করে মুক্তিপণ। যেখানে রোহিঙ্গা ছাড়াও স্থানীয় লোকজন জড়িত রয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) বিকেলে স্থানীয় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ৮-এপিবিএনের সহকারী পুলিশ সুপার (অফস্ এন্ড মিডিয়া) মো. ফারুক আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তার তিন ব্যক্তি হলেন- টেকনাফের ২০ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এইচ-১ ব্লকের ফয়েজ উল্লাহর ছেলে এনাম উল্লাহ (২১), টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নতুন পল্লান পাড়ার মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে কলিম উল্লাহ (৩৫), একই ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বরি এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে তারিকুল ইসলাম (১৯)। এর মধ্যে কলিম উল্লাহর বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্রসহ চারটি মামলা রয়েছে।
৮-এপিবিএনের সহকারী পুলিশ সুপার (অফস্ এন্ড মিডিয়া) মো. ফারুক আহমেদ জানান, গত ৮ জুলাই ১৯ নম্বর ক্যাম্প থেকে কাজ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কেফাত উল্লাহ (২৪) এবং হামিদ হোসেন (২৫) নামের দুই রোহিঙ্গাকে প্রথমে টেকনাফের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরবর্তীতে দুই জনকে নৌকাযোগে মিয়ানমার পাঠানোর সময় হামিদ হোসেন কৌশলে পালিয়ে চলে আসে। কিন্তু কেফাত উল্লাহকে মিয়ানমারে নিয়ে জিম্মি করে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পরিবারের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করা হয়।
এমন অভিযোগ এপিবিএনকে জানানো পর অপরাধীদের শনাক্ত করতে কাজ শুরু করেন তারা। যার এক পর্যায়ে উখিয়া ও টেকনাফে অভিযান চালিয়ে তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি জানান, আন্তর্জাতিক চক্রের এই তিন সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর মিয়ানমারের জিম্মি কেফাত উল্লাহকে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী নাফ নদীর তীরে আনা হয়।
পরে বৃহস্পতিবার ভোরে কেফাতকে উদ্ধার করা সক্ষম হয়। গ্রেপ্তার তিন সদস্য, উদ্ধার ও পালিয়ে আসা ভিকটিমদের দেয়া তথ্যে আন্তর্জাতিক এই চক্রটির সাত ধাপে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের কৌশল জানা গেছে।
এপিবিএন কর্মকর্তা জানান, পুরো প্রক্রিয়ায় সংঘবদ্ধ চক্রের অনেক সদস্য রয়েছেন। এদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে। একই সঙ্গে এ ঘটনায় মামলা করে আসামিদের থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।