Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রাঙ্গামাটি শহর, পানিতে ডুবে নিখোঁজ ১

Icon

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২৩, ২০:০৮

বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রাঙ্গামাটি শহর, পানিতে ডুবে নিখোঁজ ১

ভারি বর্ষণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ঘর। ছবি: রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি

কয়েকদিনের ভারি বর্ষণের ফলে পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে ক্ষয়ক্ষতির সংখ্যা বাড়ছেই। বৃহস্পতিবার পর থেকে সোমবার পর্যন্ত টানা ৫দিনের ভারি বর্ষণে জেলার ১৯৭টি স্থানে ছোট-বড় ভাঙন ও পাহাড় ধসে পড়েছে। পাহাড় ধসের কারণে জেলায় মোট ৩৮১টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; এরমধ্যে আশ্রয়ণেরও ঘর রয়েছে ১৩টি। ১০ জন আহত হয় এবং পানিতে ডুবে নিখোঁজ রয়েছেন একজন। তাকে উদ্ধারের অভিযান চালাচ্ছে ডুবুরি দল।

আজ সোমবার (৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাঙ্গামাটি জেলাপ্রশাসন এসব তথ্য জানিয়েছে। 

জেলা প্রশাসনের হিসাবে, ১৪টি ব্রিজ-কালভার্ট, ১৬টি বিদ্যুতের খুঁটি এবং জেলার ৬৮৩ একর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কসহ জেলার ৭৫টি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাময়িকভাবে ৯টি স্থানে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পাহাড়ি ঢলের কারণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ১২৪টি ঘর ও ৫টি হাটবাজার পানিতে ডুবে আছে। জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়া ইউনিয়ন ও জুরাছড়ির চারটি ইউনিয়নেরই নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তীব্র স্রোতের কারণে বন্ধ রয়েছে রাঙ্গামাটি-বান্দরবান সড়ক পথে চলাচলের চন্দ্রঘোনা ফেরি। জেলায় সোমবার পর্যন্ত মোট ২৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন ১ হাজার ৭২৭ জন মানুষ। 


জানতে চাইলে রাঙ্গামাটি জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, ‘রাঙ্গামাটির বরকল উপজেলায় পানিতে ডুবে একজন নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজ ব্যক্তিকে উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া জেলার ৫টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে এবং জেলাজুড়ে বেশকিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’

বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রাঙ্গামাটি শহর

এদিকে সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জেলা শহরের মানিকছড়ি এলাকায় জাতীয় গ্রিডের ৩৩ কেভি ভোল্টের লাইনে গাছ পড়ে বিকেল পুরো রাঙ্গামাটি শহর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সন্ধ্যা ৭টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুরো রাঙ্গামাটি শহর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। শহরে বিদ্যুৎ সরবারহ চালু হতে রাত ৯টা লাগতে পারে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) রাঙ্গামাটি বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল রহমান বলেন, ‘জেলা শহরের মানিকছড়ি এলাকায় জাতীয় গ্রিডের সোর্স লাইনে একটি বড় গাছ পড়েছে। এতে করে পুরো শহর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এখন গাছ কাটার কাজ চলছে। গাছ কাটা শেষে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন মেরামত করতে হবে। সরবরাহ লাইন সঞ্চালনের পরেই বিদ্যুৎ দেয়া যাবে।’

বান্দরবানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

এদিকে, কর্ণফুলী নদীতে তীব্র স্রোত ও ফেরির পল্টুনের লোহার দড়ি যাওয়ার কারণে সোমবার দুপুর ২টা থেকে রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ের রাঙ্গমাটি-বান্দরবান সড়কের চন্দ্রঘোনা ফেরি পারাপার বন্ধ করেছে। পল্টুনের ছিঁড়ে যাওয়া দড়ি মেরামত ও নদীর তীব্র স্রোত না কমা পর্যন্ত ফেরি পারাপাল বন্ধ রেখেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। সওজ রাঙ্গামাটি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা বলেন, তীব্র স্রোত আর পল্টুনের সমস্যার কারণে ফেরি পারাপার আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কবে নাগাদ ফেরি চালু করা যেতে পারে সেটি আপাতত বলা যাচ্ছে না। তবে কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়েই যানবাহন চলাচল করছে। কেবল ফেরি বন্ধ থাকায় এক পাড়ের যানবাহন অন্য পাড়ে যেতে পারছে না।

রাঙ্গামাটি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্য মতে, রবিবার ২৪ ঘণ্টায় রাঙ্গামাটিতে ১৪৫ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সোমবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৪৫ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টায় রাঙ্গামাটিতে ৯৪ মিলিমিটার, শুক্রবার ৭৭ দশমিক ২ মিলিমিটার এবং শনিবার ১৪৬ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫