পানিবন্দি চট্টগ্রামে পৌঁছেনি পর্যাপ্ত ত্রাণ

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২৩, ১৯:২১
বন্যায় পানিবন্দি চট্টগ্রামের মানুষ। ছবি: চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় পানিবন্দি লোকজনের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা এখনো পৌঁছেনি। অতি বৃষ্টিতে ভেঙে গেছে অনেক বাড়িঘর। ফলে চরম দুর্বিষহ অবস্থায় দিন কাটছে তাদের। কেউ ঘরের চালে আর কেউ ঘর ছেড়ে ঠাঁই নিয়েছেন আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে। অনেকে উঠেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে।
চট্টগ্রামের সাতকনিয়া উপজেলার আমিলাইষ ইউনিয়নের বাসিন্দা সাংবাদিক ইকবাল হোসেন সাম্প্রতিক দেশকালকে বলেন, এই ইউনিয়নে ৯৮ শতাংশ ঘরে পানি ঢুকেছে। আমার ঘরেও কমপক্ষে চার ফুট পানি। আমরা বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছি। আমার পাড়ার চাচার বাড়ি ভেঙে গেছে। এলাকার অধিকাংশ ঘরের লোকজন অন্যত্র সরে গেছেন। সব বাড়ির চুলা পানিতে ডুবে যাওয়ায় রান্না হচ্ছে না। কেউ নৌকা নিয়ে কিংবা কোমর সমান পানি ডিঙিয়ে খাবারের সন্ধানে বের হচ্ছেন। মানুষ খাদ্য ও পানির সংকটে আছে। সরকারি কোনো খাবার এখন পর্যন্ত এ এলাকায় পৌঁছেনি।
চরতী ইউনিয়নের মাহবুবুর রহমান সাম্প্রতিক দেশকালকে বলেন, খাদ্য সংকটের পাশাপাশি বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ নলকূপের পানির ওপর নির্ভরশীল। বন্যায় সব নলকূপ ডুবে গেছে। এ কারণে বিশুদ্ধ পানির সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে।
এ প্রসঙ্গে আমিলাইষ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোজাম্মেল হক চৌধুরী সাম্প্রতিক দেশকালকে বলেন, আমার ইউনিয়নের অধিকাংশ ঘর পানিতে ডুবে গেছে। ঘরে থাকার মত অবস্থা নেই। এ কারণে কেউ কেউ আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে উঠেছেন। যারা যাননি তারা আশ্রয় কেন্দ্র ও স্কুলে অবস্থান নিয়েছেন। বন্যায় ইতোমধ্যে আমার ইউনিয়নে ডলু ও সাঙ্গু নদীর কবলে কয়েকশত ঘর ধসে গেছে। এর মধ্যে দুটি সেমি পাকা, বাকিগুলো মাটির ঘর। তিন জন বন্যার পানির স্রোতে ভেসে গেছেন। এখনো পর্যন্ত সরকারি কোন ত্রাণ সহায়তা আসেনি। পুরো ইউনিয়ন পানিতে ডোবা তাই আগামীকাল কিছু ত্রাণ নিয়ে আমি যাবো। কী এক অবস্থার মধ্যে দিয়ে দিন কাটছে জনগণ তা বলে বোঝানো যাবে না।
কেঁওচিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ওচমান আলী সাম্প্রতিক দেশকালকে বলেন, সরকারি সাহায্য হিসেবে আমাকে এক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এগুলো এখন কাকে দেবো সবতো ডুবে আছে। এই এক টন দিয়ে হাজার পরিবারের কি হবে। যারা আশ্রয়কেন্দ্রে আছে তাদের কিছু শুকনো খাবার দেওয়ার চেষ্টা করছি ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ছাইফুল্লাহ মজুমদার সাম্প্রতিক দেশকালকে জানান, বন্যাকবলিত উপজেলার জন্য ৩৭০ টন চাল, সাড়ে সাত লাখ টাকা এবং সাড়ে তিন হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার এবং পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট এবং বিস্কুট দেওয়া হয়েছে।