
দেবীগঞ্জ থানা। ছবি: পঞ্চগড় প্রতিনিধি
পঞ্চগড়ে দুই কিশোরীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে জিম্মি করে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী এক কিশোরীর মা বাদী হয়ে গতকাল শুক্রবার (১১ আগস্ট) ৬ জনের নামসহ ১০-১১ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে দেবীগঞ্জ থানায় এজাহার দায়ের করেন।
ইতিমধ্যে পুলিশ আরিফ ইসলাম নামে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। ভুক্তভোগী দুই কিশোরীর বাড়ি দেবীগঞ্জ পৌরসদরে।
এজাহার ও ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) নুসরাত বর্ষা (ছদ্মনাম) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে পরিচিত এক যুবকের সাথে দেখা করতে উপজেলার লক্ষ্মীরহাট বাজারের পাশেই মাইক্রোস্ট্যাণ্ডে যায়। ঠাকুরগাঁও থেকে আসা ওই যুবকের সাথে তার এক বন্ধুও আসে। তারা তিনজন নিজেদের মধ্যে কথা বলার সময় সেখানে স্থানীয় কিছু যুবক উপস্থিত হয়ে তারা কেন সেখানে কথা বলছে জানতে চায়। ভুক্তভোগীরা নিজেদের পরিচয় দিলেও অভিযুক্তরা তাতে কর্ণপাত না করে অশ্লীল ভাষায় গালি দিতে থাকে। এইসময় অভিযুক্তরা ঠাকুরগাঁও থেকে আসা এক যুবকের থেকে ৩ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং তাদের চড়থাপ্পড় দিতে থাকেন।
এতে বর্ষা আতঙ্কিত হয়ে মুঠোফোনে পুরো বিষয়টি দেবীগঞ্জে থাকা তার খালাতো বোন ফারিয়া ইমরোজকে (ছদ্মনাম) জানায়। ফারিয়া বিষয়টি জানতে পেরে লক্ষ্মীরহাটের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ফারিয়া নিজের পরিচয় দিয়ে তার বোন ও ঠাকুরগাঁও থেকে আসা দুই যুবককে ছেড়ে দিতে বলে।
অভিযুক্তরা তা না শুনে তাদের চারজনকে জোর করে ভ্যানে উঠিয়ে নিয়ে পার্শ্ববর্তী বুড়াঠাকুর এলাকার আরিফ ইসলামের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। ভুক্তভোগীরা এই অর্থ দিতে রাজি না হওয়ায় তাদের আবারও চড়থাপ্পড় দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে বর্ষা তার প্রাইভেট টিউটরকে ফোন করে বিকাশে ১ হাজার টাকা নেন। এরপরও তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়না। পরে স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে চারজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
মামলার বাদী বলেন, অভিযুক্তদের কারো নাম আমার মেয়ে এবং ভাগ্নি জানতো না। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে যাদের নাম পেয়েছে তাদের নাম এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। এভাবে কাউকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ চাবে এটা কখনো মেনে নেওয়ার মতো না। আমার মেয়ে আর ভাগ্নি সেদিনের পর থেকে আতঙ্কে আছে। তারা স্বাভাবিক ভাবে কথা বলতেও পারছে না।
দেবীগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রুনা লায়লা জানান, মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকী আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।