সাভারে সাবেক স্কুল শিক্ষকের হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার

সাভার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২৩, ১০:৫৫

প্রতীকী ছবি।
ঢাকার সাভারে নিজ বাসভবনের একটি কক্ষ থেকে লুঙ্গী দিয়ে হাত-পা বাধা ও গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় গোলাম কিবরিয়া (৪৩) নামের সাবেক এক স্কুল শিক্ষকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় মরদেহের পাশে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। চিরকুটে লিখা ছিলো ‘এই ব্যক্তি সমকামী, তাই মেরে ফেলেছি... আমরা ইসলামের সৈনিক’।
গতকাল রবিবার (২০ আগস্ট) বিকেলে সাভার পৌর এলাকার ভাটপাড়া কবরস্থান রোড এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত গোলাম কিবরিয়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের ভাটপাড়া কবরস্থান এলাকার মৃত শুকুর মুন্সির ছেলে। ৯ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ৮ম। তিনি সাভার রেডিও কলোনি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক শিক্ষক। তবে বর্তমানে তিনি টিউশনি ও জমি কেনাবেচার ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন বলে জানা যায়।
স্থানীয়রা জানান, স্ত্রীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের পর তিনি ভাইদের সাথে এই বাড়িতেই আলাদা থাকতেন। প্রতিদিন তিনি সকালে ঘুম থেকে উঠলেও আজ দুপুর হয়ে গেলেও তিমি রুম থেকে বের না হওয়ায় তার রুমের কাছে গিয়ে দরজা বন্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে পেছনের দরজায় গিয়ে সেটি খোলা পেয়ে ভেতরে প্রবেশ করে দেখা যায় খাটের উপর লুঙ্গী দিয়ে হাত-পা বাঁধা ও গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় তার মরদেহ পরে থাকতে দেখা যায়। এবং মরদেহের পাশে একটি চিরকুট পাওয়া পরে থাকতে দেখেন সেখানে লেখা ছিলো, ‘এই ব্যক্তি সমকামী করে পুলিশ ভাই, আমরা তাই মেরে ফেলেছি। ভাই ও অবৈধ কাজ করে..... আমরা ইসলামের সৈনিক।’
এ বিষয়ে নিহতের ছোট ভাই আপেল মাহমুদ বলেন, আমার ভাই একাই এই বাসায় থাকতেন তিনি আগে স্কুল শিক্ষক ছিলেন তবে বর্তমানে তিনি সাভারের বিভিন্ন স্থানে প্রাইভেট টিউশনি করতেন পাশাপাশি জমি কেনাবেচার ব্যবসা করতেন। আর আমার ভাইয়ের পায়ে সমস্যা থাকার কারণে তিনি দীর্ঘক্ষণ হাটতে পারতেন না তাই একটি নির্দিষ্ট রিকসাযোগে সব জায়গায় যাতায়াত করতেন। আজকে সকালেও কিন্তু আমার ভাই তখনো বের হয়নি। নরমালি আমার ভাই ১২টার মধ্যেই ঘুম থেকে উঠে যেতেন তবে আজকে দুপুর হয়ে গেলেও তিনি ঘুম থেকে না উঠায় প্রতিবেশীরা রুমে গিয়ে আমার ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পান। এসময় তারা আমার ভাইয়ের রুমের ভেতরে থাকা একটি স্টিলের আলমারি তালা ভাঙা এবং ভেতরের মালামাল তছনছ অবস্থায় দেখতে পান। আমার জানামতে আমার ভাইয়ের কাছে জমানো অনেক টাকা ছিলো। এখন কি কারণে এবং কারা আমার আমার ভাইকে হত্যা করলো বিষয়টি আমরা বুঝতেছিনা।
এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। মরদেহের পাশে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সিআইডির একটি টিম ঘটনাস্থলে আসছে। তারা আসলেই মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে।