
হামলার ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ। ছবি: বরিশাল প্রতিনিধি
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজে (শেবামেক) দুই ছাত্রীকে র্যাগিং ও মানসিক নির্যাতনের সুষ্ঠু তদন্ত এবং সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ রবিবার (২৭ আগস্ট) দুপুর ১২ টায় নগরীর অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বরিশাল মহানগর শাখা এই বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে।
এসময় তারা সারাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে, আবাসিক হলে র্যাগিং ও শিক্ষার্থী নিপীড়ন বন্ধে কঠোর আইন করার দাবি জানান।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বরিশাল মহানগর শাখার কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক বিজন সিকদারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) বরিশাল জেলা শাখার সদস্য সন্তু মিত্র, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বরিশাল মহানগর শাখার কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটি সদস্য সচিব সুজন আহমেদ, সদস্য লামিয়া সাইমন, সরকারি ব্রজমোহন কলেজ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সদস্য মিনহাজুল ইসলাম ফারহান, সরকারি আলেকান্দা কলেজে শাখার সংগঠক ফারহানা আক্তার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ ছাত্রী হলের সম্পাদক প্রভা ও সহ-সম্পাদক জুঁই মিলে দুই শিক্ষার্থীকে গত ২৩ আগস্ট রাতে ২ ঘণ্টা যাবত রুমে আটকে রেখে র্যাগিংয়ের নামে মানসিক নির্যাতন করে। নির্যাতনের একপর্যায়ে এক শিক্ষার্থী অজ্ঞান হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তারা বলেন, অসুস্থ ও নির্যাতিত শিক্ষার্থী যাতে কোনো অভিযোগ না করেন সেজন্য ছাত্রলীগ দিয়ে তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। এমনকি গত ২৬ আগস্ট সাংবাদিকরা এই ঘটনার সংবাদ সংগ্রহে গেলে তাদের ওপর কলেজের অধ্যক্ষের উপস্থিতিতে হামলা চালায়।
নেতৃবৃন্দ বলেন, শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের এই ঘটনা বিচ্ছিন্ন বা নতুন কোন ঘটনা নয়। ২০১১ সালেও এক শিক্ষার্থীকে উলঙ্গ করে ভিডিও ধারণ করে তৎকালীন ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা তার কাছে চাঁদা দাবি করে। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট শেবাচিম শাখা এর প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করলে ছাত্রলীগ তাদের ওপরেও সন্ত্রাসী হামলা চালায়। ছাত্রলীগ তার সন্ত্রাসী রাজত্ব আজ প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজের হল গুলোতে কায়েম করেছে।
গেস্টরুম-গণরুমে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন এখন তাদের নিত্যদিনের কর্মসূচি। একজন ছাত্রীকে র্যাগিং করে হাসপাতালে ভর্তি করেই ছাত্রলীগ ক্ষান্ত হয়নি, সেই ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে সাংবাদিকরা গেলে তাদের উপর অধ্যক্ষের উপস্থিতিতে হামলা চালানোর ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে।
নেতারা আরো বলেন, র্যাগিং কোন প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিগত বিষয় হতে পারেনা, প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা রক্ষা করতে চাইলে সাংবাদিকদের ধাক্কা দিয়ে বের না করে র্যাগিং এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
এসময় বক্তারা সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া সংবাদকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলার নিন্দা জানান। একইসাথে অবিলম্বে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসহ দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের মাধ্যমে র্যাগিংমুক্ত গণতান্ত্রিক শিক্ষাঙ্গনের দাবি জানান।