Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

চিকিৎসক সংকটে পুঠিয়া হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

Icon

পুঠিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৩, ১২:১৪

চিকিৎসক সংকটে পুঠিয়া হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ছবি: পুঠিয়া প্রতিনিধি

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ৫০ শয্যা হাসপাতালে সঠিক সেবা পাচ্ছে না রোগীরা। আর জরুরি বিভাগে চিকিৎসকের পরিবর্তে কাজ করছেন নাইটগার্ড ও অন্যান্য কর্মচারীরা। যার কারণে দুর্ঘটনার রোগীসহ নানা রোগে আক্রান্তরা জরুরি বিভাগ থেকে প্রাথমিক সেবাও পাচ্ছে না।

তবে স্থানীয়দের অভিযোগ বর্তমান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এখানে যোগদানের পর থেকে স্বাস্থ্য সেবার মান ভেঙ্গে পড়েছে। তবে হাসপাতালের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চিকিৎসক ও কর্মচারী সংকটের কারণে সেবার মান কিছুটা হলেও ব্যাহত হচ্ছে।

জানা গেছে, হাসপাতালে চিকিৎসক, ল্যাব টেকনিশিয়ান, নার্স, স্বাস্থ্য সহায়কসহ মোট ৫৫টি পদ শূন্য রয়েছে। আর ২১ জন চিকিৎসকের স্থলে বর্তমানে কর্মরত আছেন পাঁচজন। এদের মধ্যে একজন মেডিকেল অফিসার জরুরি বিভাগে সেবা দিচ্ছেন। বাকি চারজন (গাইনি, আবাসিক মেডিকেল অফিসার, শিশু ও জুনিয়র কনসালেন্ট) বহির্বিভাগে সেবা দিচ্ছেন। সেই সাথে বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে ৯ জন (অস্থায়ী) জুনিয়র চিকিৎসক এসে বহির্বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেন।

যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় এখানে গড়ে প্রতিদিন সাড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ রোগী সেবা নিতে আসেন এই হাসপাতালে। পুঠিয়াসহ নিকটবর্তী বাগাতিপাড়া, নাটোর সদর, বাঘা, চারঘাট, দুর্গাপুর উপজেলা থেকেও রোগীরা এখানে আসেন।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা গেছে, আল আমিন নামের একজন চিকিৎসক জরুরি বিভাগ ও সকল ভর্তি রোগীদের সেবা দিচ্ছেন। তিনি বলেন, রামেক হাসপাতালের পর সবচেয়ে ব্যস্ততম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এটি। তার উপর ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের সাথে হওয়ায় এখানে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আসছে রোগীরা। তবে রোগীর তুলনায় এখানে চিকিৎসক সংকট অনেক বেশি।

তিনি আরো বলেন, চিকিৎসক বাড়লে সেবার মান আরো বাড়বে।

অপরদিকে বহির্বিভাগে সেবা নিতে লাইনে দাড়িয়ে থাকে শতশত নারী-পুরুষ ও শিশু রোগীরা। আর মাত্র পাঁচজন চিকিৎসক আগত রোগীদের ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন।

সেবা নিতে আসা শহীদ হোসেন নামের একজন রোগী বলেন, বিগত দিনে জরুরি বিভাগে একজন এমবিবিএস ও একজন সহকারী চিকিৎসক প্রাথমিক সকল চিকিৎসা সেবা দিতেন। আর এখন জরুরি বিভাগে কর্মচারীরা বসে থাকে। চিকিৎসক থাকেন আলাদা একটি চেম্বারে। বহির্বিভাগেও রোগীর তুলনায় ডাক্তার কম। যার কারণে সেবা নিতে আসা রোগীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে জরুরি বিভাগে কর্মরত অস্থায়ী কর্মচারীরা বলেন, বিগত সময় জরুরি বিভাগে একজন এমবিবিএস ও একজন মেডিকেল এ্যাসিটেন্ট রোগীদের সেবা দিতেন। কিন্তু এখানে নতুন কর্মকর্তা যোগদানের পর জরুরি বিভাগ থেকে উপ-সহকারী চিকিৎসকদের বদলি করে বহির্বিভাগে দিয়েছেন। অপরদিকে নিয়মানুসারে আবাসিক চিকিৎসক সার্বক্ষণিক এখানে থাকার নিয়ম থাকলেও তিনি রাজশাহী শহরে বসবাস করেন। তিনি আসেন সকাল ১০টার দিকে। আর ফিরে যার দুপুর ১২টা থেকে ১টার মধ্যে। আর বহির্বিভাগে কয়েকজন চিকিৎসক থাকলেও জরুরি বিভাগ এবং ভর্তি রোগীদের সেবা করছেন মাত্র একজন চিকিৎসক। তাই একটু জটিল রোগী আসলে তাদের রামেক হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এরিয়ায় তার বসবাস উপযোগী বাসা নেই। যার কারণে তাকে শহরে থাকতে হয়। আবাসিক মেডিকেল অফিসার সার্বক্ষণিক এখানে না থাকার কারণে সেবার মান কমছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিষয়ে টিএইচও এর সাথে কথা বলেন।

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাজরুই রহমান প্রত্যয় বলেন, এখানে রোগীদের তুলনায় চিকিৎসক সংকট আছে। তবে আগত রোগীদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।

তিনি এখানে যোগদানের পর সেবার মান কমেছে এমন প্রশ্নে বলেন, এটা সঠিক নয়, তিনি যোগদানের পর জেলার মধ্যে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সেরা পদক পেয়েছে। তিনি বাইরে থেকে প্রযুক্তির মাধ্যমে সার্বক্ষণিক স্বাস্থ্য সেবা মনিটরিং করেন।  

রাজশাহী জেলার সিভিল সার্জন আবু সাঈদ মোহাম্মদ ফারুক বলেন, পুঠিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে কিছু চিকিৎসক ও কর্মচারী সংকট রয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে সংকট কেটে যাবে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫