দেড় মাস পর ভেসে উঠল রাঙ্গামাটির ঝুলন্ত সেতু

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৩, ১৬:১৯
কাপ্তাই হ্রদের ঝুলন্ত সেতু। ছবি: রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি
দেড় মাস পানিতে ডুবে থাকার পর কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে যাওয়ায় ভেসে উঠেছে ‘সিম্বল অব রাঙ্গামাটি’ খ্যাত ঝুলন্ত সেতুটি। তবে হ্রদের পানির কমে যাওয়ায় সেতুটি ভেসে উঠলেও পর্যটকদের জন্য এখনো সেতুতে প্রবেশ ও টিকেট বিক্রয় কার্যক্রম চালু হয়নি। আগামীকাল শুক্রবার (২০ অক্টোবর) থেকে সেতুতে পর্যটক ও স্থানীয়দের প্রবেশে উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের। করপোরেশনের নিয়ন্ত্রণাধীন রাঙ্গামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স সেতুটির পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রাঙ্গামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানান, ‘গতকাল বুধবার থেকে কাপ্তাই হ্রদের পানি কমতে থাকায় ঝুলন্ত সেতুর পানিও নামতে শুরু করেছে। আজকেও (বৃহস্পতিবার) সেতুর ওপর থেকে সম্পূর্ণ পানি নেমে গেছে। গতকাল থেকে সেতুতে রঙ, সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে। আগামীকাল শুক্রবার থেকে সেতুটি পর্যটক ও স্থানীয়দের প্রবেশে উন্মুক্ত করে দেওয়া এবং টিকেট বিক্রয় কার্যক্রম শুরু হবে।’
এর আগে, গত ৩ সেপ্টেম্বর উজানের পানির ঢল ও বৃষ্টিপাতে কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ার কারণে পর্যটন ঝুলন্ত সেতুটি ডুবে যায়। ওই সময় ঝুলন্ত সেতুতে প্রবেশের টিকেট বিক্রয় কার্যক্রম বন্ধের পাশাপাশি সেতুতে স্থানীয় ও পর্যটকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে লাল পতাকা টানিয়ে দিয়েছিল পর্যটন করপোরেশন। কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ফলে হ্রদের পানি কমতে শুরু করায় এক মাস ১৫ দিন পর বুধবার থেকে ফের ভেসে উঠছে ঝুলন্ত সেতুটি।
কাপ্তাই হ্রদের পানি পরিমাপ করে থাকে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (কন্ট্রোল রুম) সূত্র জানিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টার পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে পানি রয়েছে ১০৫ দশমিক ৫০ মিনস সি লেভেল (এমএসএল। রুলকার্ড অনুযায়ী কাপ্তাই হ্রদে স্বাভাবিকভাবে পানি থাকার কথা ছিল ১০৭ দশমিক ৭০ এমএসএল। সে হিসাবে রুলকার্ডের স্বাভাবিক স্কেল থেকে ২ এমএসএল পানি কম রয়েছে হ্রদে। গত ৩ সেপ্টেম্বর (রবিবার) ঝুলন্ত সেতুটি ডুবে যাওয়ার সময় কাপ্তাই হ্রদের পানির পরিমাণ ছিল ১০৫ দশমিক ৭০ মিনস সি লেভেল (এমএসএল)।
কাপ্তাই হ্রদে পানির ধারণ সক্ষমতা ১০৯ মিনস সি লেভেল (এমএসএল)। যদিও ১০৯ এমএসএল পর্যন্ত পানি ধারণ সক্ষমতা থাকলেও হ্রদের পানি ১০৫ এমএসএলের অধিক হলেই ডুবে যায় ঝুলন্ত সেতু। কাপ্তাই হ্রদ ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১২০ এমএসএল জলসীমার মধ্যে বা নিচে কোনো স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি নেই। কিন্তু এই জলসীমার নিচেই নির্মিত হয়েছে সেতুটি। পর্যটন সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, হ্রদে পানি ধারণ সক্ষমতার রুলকার্ড না মেনে ‘অপরিকল্পিত’ভাবে সেতুটি নির্মাণের ফলে বর্ষা মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়লেই ডুবে যায় দেশ-বিদেশে ‘সিম্বল অব রাঙ্গামাটি’ হিসেবে পরিচিত ঝুলন্ত সেতুটি।