Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

কঠোর অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

স্বাভাবিক ছিল কক্সবাজারের হরতাল পরিস্থিতি

Icon

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৩, ২১:৩৮

স্বাভাবিক ছিল কক্সবাজারের হরতাল পরিস্থিতি

সারাদিন স্বাভাবিক ছিল কক্সবাজারের হরতাল পরিস্থিতি। ছবি: কক্সবাজার প্রতিনিধি

আজ রবিবার (২৯ অক্টোবর) কক্সবাজারে হরতালের কোনো প্রভাব নেই। সারাদিন স্বাভাবিক ছিলো কক্সবাজারের হরতাল পরিস্থিতি। বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দলগুলোর ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে। হরতালে নাশকতা ঠেকাতে সকাল থেকে কক্সবাজারের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্ট ও মহাসড়কে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ফলে সড়কে হরতালের তেমন কোনো প্রভাব নেই বললে চলে। সকাল থেকে প্রায় প্রতিটি সড়কেই ভারি যানবাহন ছাড়া সবধরনের যান চলাচল স্বাভাবিক ছিলো। নিত্যদিনের মতোই স্বাভাবিক চলেছে আদালতের কার্যক্রম। তবে হরতালের প্রভাবে কক্সবাজারে কমে গেছে পর্যটকের সংখ্যা। রবিবার একেবারে পর্যটক শূন্য ছিলো কক্সবাজার। 

গতকাল শনিবার (২৮ অক্টোবর) বিএনপির সমাবেশ থেকে ঘোষণা আসে রবিবার সকাল-সন্ধ্যা দেশব্যাপী হরতাল। সারাদেশের মতো শনিবার সন্ধ্যায় হরতালের বিপক্ষে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠন এবং হরতালের পক্ষে বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠন মিছিল করে। অনেক সড়কে টায়ার জালিয়ে বিক্ষোভও দেখায় বিএনপি সমর্থকরা। বিএনপির হরতালকে সমর্থন দেয় নিবন্ধন বাতিল করা সংগঠন জামায়াতে ইসলামী ও সমমনা দলগুলো।

পূর্ব ঘোষণা মতে, হরতালে রবিবার মাঠে নামার কথা থাকলেও কক্সবাজার সদর ও অন্যান্য উপজেলা সমূহের কোথাও পিকেটিংয়ে নেই বিএনপি-জামায়তের নেতা-কর্মীরা। তবে কক্সবাজার পৌর শহরের ঝাউতলা হোটেল রেনেসাঁসের সামনের প্রধান সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে পালিয়ে যায় হরতাল সমর্থকরা।

সড়কে বিএনপি-জামায়াতের কেউ না থাকলেও অবস্থান নিয়েছে কক্সবাজার জেলা, পৌর আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে তাদের অবস্থান চোখে পড়ার মতো ছিলো। 

সড়কে যানবাহন নিয়ে বের হওয়া ক্ষুদ্রযানের চালকরা জানান, কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়া-ঈদগাঁও-রামু-উখিয়া-টেকনাফ ও কক্সবাজার সদরের কোথাও কোনো পিকেটিং বা হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করা দলগুলোর নেতাকর্মীদের অবস্থান চোখে পড়েনি। যাত্রী নিয়ে চলাচলের সময় কোথাও কোনো বাধার মুখে পড়তে হয়নি। তবে শনিবার রাজধানীতে বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন লাগানোর দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মিডিয়ায় দেখেছি তাই আমাদের মাঝে কিছুটা আতঙ্ক কাজ করছে।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি রকিবুজ্জামান বলেন, সকাল থেকে কক্সবাজার শহরের গুরুত্বপূর্ণ ১২টি পয়েন্টে পুলিশের টিম মাঠে রয়েছে। কোনো হরতাল হয়নি কক্সবাজারে। 

রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু তাহের দেওয়ান বলেন, রামুতে শান্তিপূর্ণ হরতাল চলছে। নাশকতা ঠেকাতে বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে। এই পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সুকান্ত চক্রবর্তী বলেন, মহেশখালীতে হরতালের কোনো প্রভাব নেই। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমাদের টিম মাঠে ছিলো। মানুষের নিরাপত্তায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি। 

কক্সবাজারের চকরিয়া চিরিঙ্গা হাইওয়ে থানার ইনচার্জ খোকন কান্তি রুদ্র জানান, হরতালে সরকারি সম্পত্তি, সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা ও স্বাভাবিক চলাচল বজায় রাখতে কক্সবাজার মহাসড়কের বানিয়ারছড়া স্টেশনে হাইওয়ে পুলিশ সতর্ক অবস্থান রয়েছে। তার নেতৃত্বে পুলিশের পৃথক দুইটি টিম মাঠে দায়িত্বপালন করছে। হরতালের নামে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড় দেয়া হবে না।

টেকনাফ মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বলেন, টেকনাফে পুলিশ সতর্ক অবস্থান রয়েছে। পুলিশের পৃথক চারটি টিম সবধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কাজ করছে।

গণপরিবহনের সংশ্লিষ্টরা বলছে, হরতালের কারণে রাস্তা গাড়ি সংখ্যা কম। কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিলে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম যাত্রীবাহী বাস ছাড়া হবে।

হরতালের কারণে সাধারণ জনগণ আতঙ্কে রয়েছে, বাজারে দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজ খোলা থাকলেও ছাত্রছাত্রীর পরিবহনে কারণে যাতায়াতের ব্যাঘাত হচ্ছে।

গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে আমাদের শক্ত অবস্থান ছিলো। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আমরা সজাগ ছিলাম। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় আমরা মাঠে রয়েছি। 

বেলা ১২ টার দিকে পেকুয়া থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ওমর হায়দার বলেন, বিএনপি- জামায়াতের হরতালে পেকুয়া কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্তক অবস্থায় রয়েছে। পুলিশের পৃথক ৬টি টিম মাঠে রয়েছে।

কক্সবাজার পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. নজিবুল ইসলাম জানিয়েছেন, হরতালের নামে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, সহিংসতা ঠেকাতে নেতাকর্মীরা মাঠে রয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করলে প্রতিহত করা হবে। এছাড়া উখিয়া, টেকনাফ, চকরিয়া, মহেশখালীতে হরতাল বিরোধী মিছিল করেছে আওয়ামীলীগ।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো রফিকুল ইসলাম বলেন , সকাল থেকে  মহাসড়কসহ জেলা জুড়ে প্রতিটি পয়েন্টে পুলিশের  টিম সতর্ক অবস্থানে। মাঠে রয়েছে র‌্যাবের কয়েকটি টিমও। কোথাও কেউ সহিংস ঘটনা ঘটাতে চাইলে প্রতিহত করা হবে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫