সিরাজদীখানে নিমতলা রেলওয়ে স্টেশন উন্মুক্ত হচ্ছে ডিসেম্বরে

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২৩, ১৬:৫০

নিমতলা রেলওয়ে স্টেশন। ছবি: মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
যাত্রী ওঠা-নামার জন্য পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলার নিমতলা রেলওয়ে স্টেশন ডিসেম্বর মাস থেকে উন্মুক্ত হচ্ছে। এছাড়া পরিকল্পনা অনুযায়ী এই স্টেশনের সঙ্গে কন্টেইনার ডিপো চালু হলে ট্রান্স এশিয়া রেল নেটওয়ার্কের সুফল পাওয়া যাবে। তাই ভবিষ্যতে নিমতলা বাণিজ্যিক হাবে পরিণত হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করেছেন।
বৃহৎ এই নিমতলা স্টেশন অতিক্রম করে চলতি নভেম্বর মাস থেকে নিয়মিত দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। আর ডিসেম্বরে যাত্রী ওঠা-নামার জন্য স্টেশনটি উন্মুক্ত করা হবে। যাত্রী ওঠা-নামা শুরু হলে চারদিকে স্টেশনটির জৌলুস ছড়িয়ে পড়বে। বিশাল এই স্টেশনে প্রয়োজনীয় ভবন ছাড়াও গ্যাংহার্ড, ডরমিটরিসহ ১৩টি ভবনের কাজ শেষ। এক প্লাটফর্ম থেকে অপর প্লাটফর্মে যাওয়ার জন্য নির্মাণ করা হয়েছে ফুটওভার ব্রিজ। তাই ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে ঘেঁষা স্টেশনটি ভৌগলিক কারণেই বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে।
পদ্মা রেল সেতু সংযোগ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক-২ ব্রিগেডিয়ার আহমেদ জামিউল ইসলাম জানান, এই স্টেশন ঘিরে কন্টেইনার ডিপো করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে বৃহত্তর বাণিজ্য কেন্দ্রে রূপ নিবে এলাকাটি। এটি বাণিজ্যিক হাবে পরিণত হবে। স্টেশনটির সিগন্যাল কম্পিউটার বেজড ইন্টারলকিং- ‘সিবিআই’ সিস্টেমে যুক্ত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, মেইনটেনেন্স ওয়ার্কশপ সুবিধাসহ এক হাজার ৪০০ মিটার দীর্ঘ এই স্টেশনের অগ্রগতি ৯০ শতাংশ।
পদ্মা সেতু রেল নেটওয়ার্ক প্রকল্পের প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন জানান, এই প্রকল্পের আওতায় ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথে ২০টি স্টেশন রয়েছে। এর মধ্যে নিমতলা স্টেশনেই কন্টেইনার স্টেশন করা হচ্ছে। এছাড়া ২০টি স্টেশনের মধ্যে ভাঙ্গা জংশনের পরই সর্ববৃহৎ স্টেশন এটি। এই স্টেশন ঘিরে অপার সম্ভাবনা হাতছানি দিয়ে ডাকছে।
তিনি জানান, ঢাকার কমলাপুর থেকে ২৭ কিলোমিটার দূরত্বের হবে নিমতলা স্টেশনটি। এখান থেকে মাওয়া স্টেশনের দূরত্ব ১৩ দশমিক ৪০ কিলোমিটার। আর পদ্মা সেতুর দূরত্ব প্রায় ১৬ কিলোমিটার।
আলমগীর হোসেন আরো জানান, আড়িয়াল বিলের সঙ্গে এই স্টেশনটিতে কন্টেইনার স্টেশন হলে আন্তর্জাতিক রুটের অনেক পণ্য এখান থেকে খালাস হবে। আবার এ স্টেশন থেকেই পণ্য রপ্তানি করা যাবে। তাই গার্মেন্টসহ অনেক শিল্প কলকারখানা গড়ে উঠবে এ স্টেশনকে কেন্দ্র করে। এছাড়া ভবিষ্যতে আড়িয়াল বিলে বিমানবন্দর হলে এই স্টেশনের গুরুত্ব আরো বেড়ে তা ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনকেও ছাপিয়ে যাবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে মতে, নিমতলা রেলওয়ে স্টেশনের পাশে আধুনিক ও বহুমুখী সুবিধা সম্বলিত কন্টেইনার স্টেশন হবে। এখানে দোতলায় কন্টেইনার ওঠা-নামাসহ পণ্য দ্রুত খালাসে প্রযুক্তি ব্যবহার হবে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
উল্লেখ্য, গত ১ নভেম্বর থেকে বাণিজ্যিক ভাবে ঢাকা-ভাঙ্গা রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। এই নতুন রেলপথের সঙ্গে পুরনো পথে যুক্ত হয়ে খুলনা-ঢাকা ও বেনাপোল-ঢাকা রুটে দুই জোড়া ট্রেন নিয়মিত চলাচল করছে। আগামী বছরের প্রথম দিকেই ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত প্রকল্পের বাকি অংশের কাজ শেষে ঢাকা-যশোর নতুন পথে ট্রেন চালু হলে স্টেশনটির সুফল মিলবে।