আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) আসনে মনোনয়ন বৈধতা নিয়ে চ্যালেঞ্চের মুখে পড়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ড. শাম্মী আহম্মেদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সংসদ সদস্য পংকজ নাথ।

এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি বাংলাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়ার দ্বৈত নাগরিক হলেও হলফনামায় সেই তথ্য গোপন করেছেন।

অপরদিকে, আসনটির বর্তমান সংসদ সদস্য পংকজ নাথের বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি নিজের সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।

দুজনের পাল্টাপাল্টি এমন অভিযোগের বিষয়ে শুনানি হলেও সিদ্ধান্ত অপেক্ষমান রেখেছেন রিটার্নিং অফিসার। এই দুজনসহ অপেক্ষমান থাকা মোট ৭ জনের মনোনয়নের অবৈধতার বিষয়ে আগামীকাল সোমবার (৪ ডিসেম্বর) সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার মো. শহিদুল ইসলাম।

এর আগে, রবিবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় বরিশাল জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল জেলার ৬টি সংসদীয় আসনের দাখিল করা ৫৫টি মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

যাচাই-বাছাইয়ে জেলার তিনটি আসনে ছয় জনের মনোনয়নপত্র নানা ত্রুটির কারণে বাতিল করা হয়। এছাড়া ৭ জন প্রার্থীর বিরুদ্ধে ঋণ খেলাপিসহ বিভিন্ন অভিযোগের শুনানি হলেও সিদ্ধান্ত অপেক্ষমান রাখা হয়। 

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শাম্মী আহমেদের বিরুদ্ধে দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগ তোলেন পংকজ নাথ। আর পংকজ নাথের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন শাম্মী আহমেদ।

এসময় শাম্মী আহমেদের পক্ষে একজন ব্যারিস্ট্রার এবং একজন আইনজীবী শুনানিতে অংশ নিলেও পংকজ নাথ নিজেই তার প্রার্থীতা এবং মনোনয়নের বিষয়ে শুনানি করেন।

শুনানি শেষে পংকজ নাথ সাংবাদিকদের বলেন, শাম্মী আহমেদ বাংলাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়ার দ্বৈত নাগরিক। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী দ্বৈত নাগরিকরা বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হলে তাকে অবশ্যই বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করে আসতে হবে। শাম্মী আহমেদ অস্ট্রেলিয়ায় নাগরিক্ত পরিত্যাগ না করায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল হতে পারে জেনেই আমি শেষ মুহূর্তে অনলাইনের মাধ্যমে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি।

নিজের বিরুদ্ধে সম্পদের হিসাব গোপন করার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঢাকায় বিহঙ্গ পরিবহন কোম্পানির একটি অংশের শেয়ার আমি। এটা আমার কাছে বড় কোন অভিযোগ বলে মনে হয়নি। কারণ আমি আয়কর রিটার্নে এ বিষয়টি উল্লেখ করেছি। এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে আমাকে জানিয়েছে।

এদিকে, যাচাই-বাছাই কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন শাম্মী আহমেদ। কিন্তু তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন তিনি। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে তিনি কিছু বলবেন না বলে জানান।

বরিশাল জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, বরিশাল-৪ আসনে মোট ৭ জনের বিষয়ে নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে প্রার্থীদের উপস্থিতিতে শুনানি হয়েছে। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ৪ ডিসেম্বর জানিয়ে দেয়া হবে।