মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার লাঙ্গলবাধ বাজার এলাকায় গোলাম মোরশেদ টুকু (৪৫) নামের এক যুবক প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়ে রবিবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তিনি এ গ্রামের মৃত কেরামত আলীর ছেলে।

আহত যুবক অভিযোগ করেন, গত ২৬ নভেম্বর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ মাগুরা-১ আসনে সাকিব আল হাসানের নাম ঘোষণায় নিজ এলাকায় আনন্দ মিছিল করার কারণে একই এলাকার প্রতিপক্ষ স্থানীয় গয়েশপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল হালিমের সমর্থকরা রবিবার তার উপর হামলা চালিয়েছে। আহত টুকু শ্রীপুরের গয়েশপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তার বাড়ি শ্রীপুরের বড় উদাস গ্রামে।

আহত টুকু জানান, রবিবার বিকালে তিনি স্থানীয় লাঙ্গলবাধ বাজার কৃষি ব্যাংক থেকে কাজ সেরে নিজ গ্রামে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে বিকাল ৫টার দিকে লাঙ্গলবাধ বাজার এলাকায় হালিম চেয়ারম্যানের সমর্থকরা পূর্ববর্তী বিরোধের জের হাতুড়িপেটা করে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করে। 

তিনি জানান, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনিসহ তার লোকজন ইউসুফ আলী নামে অন্য একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীকে সমর্থন করেন। যা নিয়ে তাদের মধ্যে অনেক আগে থেকেই বিরোধ চলছিল। ২৬ নভেম্বর মিছিল দেওয়ার ঘটনাকে ইস্যু হিসেবে নিয়ে হালিম চেয়ারম্যান ও তার সমর্থকরা এ হামলা চালায়। হামলার সময় তাদের বলতে শোনা যায়- ‘চেয়ারম্যান হতি চাস, এ কারণে নতুন নেতার মিছিল দিয়ে নেতা হওয়ার সুযোগ খুঁজতিছিস। তোকে নেতা বানাচ্ছি’।

টুকু বলেন, আমাদের পরিবার  স্বাধীনতার আগে থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। কখনো অন্য দল করিনি। আব্দুল হালিম বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দল করেছে। এখন বড় আওয়ামী লীগ সেজেছে। ১৯৯৭ সালে গোলাম মওলা নামে আমার এক ভাইকে আব্দুল হালিম ও তার লোকজন গুলি করে হত্যা করে। ওই সময় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমাদের পরিবার আব্দুল হালিমের বিপক্ষে মজিদ মোল্যা নামে একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে। এ নির্বাচনে মজিদ মোল্যার কাছে হেরে যান আব্দুল হালিম। এই ঘটনায় ১৯৯৭ সালের ২০ ডিসেম্বর শ্রীপুরের শ্রীকোলে একটি মাঠের মধ্যে আমার ভাইকে গুলি করে হত্যা করে হালিম ও তার লোকজন। এ ঘটনায় আমরা মামলা করি। ওই মামলায়। আব্দুল হালিম কিছুদিন জেলে ছিলেন।

এ ব্যাপারে শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাঞ্চন কুমার রায় বলেন, লাঙ্গলবাধ এলাকায় গোলাম মোরশেদ টুকু নামে এক যুবক আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। ঘটনার তদন্ত চলছে। এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে। দোষীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। 

গয়েশপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম এ বিষয়ে বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে। ঘটনার সাথে আমি কিংবা আমার কোনো ব্যক্তি জড়িত নয়। সে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এলাকার তার অনেক শত্রু থাকতে পারে। ঘটনার তদন্ত করলে প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে। নৌকার প্রার্থীর মিছিল বের করার কারণে তার উপর হামলা হয়েছে এমন তথ্য সঠিক নয়। কারণ আমার ইউনিয়নে সে ধরণের রাজনৈতিক কোনো অবস্থা নেই। আমি সাকিব মাগুরায় আসার দিন ২৯ নভেম্বর নিজে সাকিবের পক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা নিয়ে মাগুরা গেছি। আমাদের অবস্থান সাকিবের বিপক্ষে নয়। বরং নৌকার পক্ষে।