আজ ৬ ডিসেম্বর লালমনিরহাট হানাদার মুক্ত দিবস

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:৪৭

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ। ছবি: লালমনিরহাট প্রতিনিধি
১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর লালমনিরহাট জেলা সম্পূর্ণভাবে শত্রুমুক্ত হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মরণপণ লড়াই আর মুক্তিকামী জনগণের দূর্বার প্রতিরোধে লালমনিরহাটে পাক হানাদার বাহিনীর পতন হয়।
চূড়ান্ত বিজয়ের পূর্ব মুহূর্তে মুক্তিযোদ্ধারা লালমনিরহাট ঘিরে ফেললে অবস্থা বেগতিক দেখে এই দিনে ভোর ৬ টায় লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশন থেকে পাক সেনা, রাজাকার আলবদর ও তাদের দোসররা দুটি স্পেশাল ট্রেনে করে রংপুর ক্যান্টনমেন্টে পালিয়ে যায়।
তিস্তা নদী পার হওয়ার পরে পাক সেনারা তিস্তা রেল সেতুতে বোমা বর্ষণ করে সেতুর মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে। লালমনিরহাটে ৭১এর এই দিনে এখানে সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়ে মুক্তির উল্লাস। লালমনিরহাট শত্রুমুক্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে চারদিক থেকে লোকজন ছুটে আসতে থাকে শহরের দিকে।
এদিন সন্ধ্যার মধ্যে শহরে (বর্তমান মিশন মোড়) এলাকায় লোকে পূর্ণ হয়ে যায়। স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে শহর ও আশ-পাশের গ্রাম। আনন্দে উদ্বেলিত কণ্ঠে স্বদেশের পতাকা নিয়ে ছুটোছুটি করতে থাকে তরুণ, যুবক, আবাল বৃদ্ধ বনিতা সকলই। শহরের বিভিন্ন রাস্তায় বের হয় আনন্দ মিছিল।
মুক্তিযুদ্ধের সময় গোটা বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৬নং সেক্টর শুধু বাংলাদেশের মাটিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আর সেটি অবস্থিত লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে।
এ সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন, বিমান বাহিনীর এম খাদেমুল বাশার। ৬ ডিসেম্বর মিত্র বাহিনীর সাথে সর্বস্তরের মানুষ শহরে প্রবেশ করলে স্বাধীন বাংলার পতাকা ওড়ান তিনি।
লামনিরহাটের একমাত্র বীর প্রতীক প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অব:) আজিজুল হক এক সাক্ষাৎকারে অশ্রুসিক্ত নয়নে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করেন।
অবিস্মরণীয় এই দিনটি যথাযথভাবে উদযাপনের জন্য লালমনিরহাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, মুক্তিযোদ্ধা সংগঠন, সাংবাদিকবৃন্দ ও জেলা প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের তথ্য অনুযায়ী শহরে র্যালি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ডিসপ্লে প্রচার করবে বলে জানা গেছে।