
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ। ছবি: শেরপুর প্রতিনিধি
খণ্ড খণ্ড যুদ্ধের পর একাত্তুরের ৬ ডিসেম্বর পরাজিত হয় পাকহানাদার বাহিনী। মুক্ত হয় শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলা। এ যুদ্ধে পাকহানাদারদের হাতে শহীদ হন ২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা। হত্যা করা হয় অনেক গ্রামবাসীকে। যুদ্ধের সময় হানাদার বাহিনী শ্রীবরদী, ভায়াডাঙ্গা, ঝগড়ারচর ও কুরুয়াতে ক্যাম্প স্থাপন করে। তবে মিত্র বাহিনীর তীব্র আক্রমণে পিছু হটতে বাধ্য হয় হানাদার বাহিনীসহ রাজাকার ও আলবদররা।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ৪ ডিসেম্বর দেশের ১১ নম্বর সেক্টর ধানুয়া কামালপুরে মিত্র বাহিনীর আক্রমণে হেরে যায় পাক হানাদার বাহিনী। পরে পাক সেনারা ছুটে আসে শ্রীবরদীর দিকে। এ সংবাদ পেয়ে ১১নং সেক্টরের কর্নেল আবু তাহেরের নেতৃত্বে গেরিলা সৈনিকরা রাস্তার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন। শ্রীবরদী হতে বকশিগঞ্জ সড়কের টিকরকান্দি এলাকায় সন্মুখ যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয় মুক্তিযোদ্ধারা।
মেজর আইয়ুব সাজোয়া গাড়ি নিয়ে সেই রাস্তায় আসার পথে শুরু হয় সন্মুখযুদ্ধ। রাতভর চলে মুখোমুখি যুদ্ধ। বিস্ফোরিত হয় স্থলমাইন। চলে গুলিবর্ষণ। এলাকার লোকজন ভয়ে ঘরবাড়ি ফেলে ছুটে যায় নিরাপদ আশ্রয়ে। অবশেষে এ যুদ্ধে নিহত হয় মেজর আইয়ুবসহ পাক সেনারা।
এ খবর ছড়ে পড়ে চারিদিকে। ভোরে শতশত লোক জড়ো হয় শ্রীবরদী হতে বকশিগঞ্জ সড়কে। সবার কণ্ঠে মুখরিত হয়ে ওঠে আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি। এসময় সেখান থেকে দলে দলে উচ্ছ্বসিত মানুষ আর মুক্তিযোদ্ধারা আসে শ্রীবরদী বাজারের চৌরাস্তা মোড়ে। এখানে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ মুক্তিকামী মানুষ।
আজ শ্রীবরদী মুক্ত দিবস। এ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধারা।