গাফিলতিতে ঝুলে আছে দেড় কোটি টাকার নির্মাণ কাজ

পুঠিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:২৮

অবহেলা ও গাফিলতিতে ঝুলে আছে ওয়াসব্লকের কাজ। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল
রাজশাহীর পুঠিয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অবহেলা ও গাফিলতিতে পুরো উপজেলায় ঝুলে আছে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ টাকার ১০টি ওয়াসব্লকের কাজ। এতে করে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন দশ স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গত ২০২২ সালে উপজেলার হাড়োগাথী, সাধনপুর, সাতঘোষপাড়া, জগদিশপুর, সাতবাড়িয়া, শুকদেবপুর, দিঘলকান্দি, বাশঁপুকুরিয়া, গন্ডগোহালী ও গাঁওপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওয়াসব্লকের কাজ শুরু করেন মেসার্স গোলাম মোর্তুজা ও সারা ইন্টারন্যাশনাল নামের দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ১ কোটি ৪০ লাখ টাকার বেশি ব্যয়ে ১০টি ওয়াসব্লকের একটিরও কাজ শেষ হয়নি এখনও।
এদিকে ওয়াসব্লক গুলোর যতটুকু কাজ শেষ হয়েছে, সেগুলোও খুবই নিম্নমানের।
এসব বিষয়ে শুকদেবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরদার মোহাম্মদ মোজাম্মেল ও হাড়োগাথী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম সিরাজী বলেন, স্কুলে যে টয়লেট আছে তা ব্যবহার করার মত নয়। তাই জরুরি ভিত্তিতে ওয়াসব্লক দরকার। বাচ্চারা খোলা মাঠে, মানুষের বাড়ির পাশে ও অন্যের জমিতে গিয়ে টয়লেট করেন। এদিকে কাজগুলো নিম্নমানের হওয়ার কারণে ওয়াল এবং পিলারের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। ওই নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ার কারণে ওয়াসব্লকের সেপটিক ট্যাংক গুলো মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কোন মুহূর্তে ছোট ছোট বাচ্চারা সেখানে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সোহেল রানা ও লিটন বলেন, বহুদিন ধরে এসব অযত্ন অবহেলায় পড়ে আছে। কারও কোন উদ্যোগ নেই।
নির্মাণ কাজ ঝুলে আছে কেন- এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার মাসুদ রানা বলেন, কাজ নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে হচ্ছে না। ভালো কাজ হচ্ছে। আর ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই কাজ শেষ করা হবে।
অন্যদিকে সারা ইন্টারন্যাশনাল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা বলতে মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে মোবাইল বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান বলেন, উপজেলায় মোট ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াসব্লকের ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। তাদের ওই টাকায় কাজ শেষ করা সম্ভব হচ্ছে না। সময় ও ব্যয় বাড়াতে হবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ও জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় কাজ শেষ করা সম্ভব হচ্ছে না।