ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অযোগ্য মৎস্য সমিতিকে বিল ইজারা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:৩২

দুগাংগী বিল। ছবি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অনিয়মে অযোগ্য মৎস্যজীবী সমিতিকে বিল ইজারা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে জেলা প্রশাসক ও সরকারী জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির কাছে গত ১০ ডিসেম্বর অভিযোগ দেন সেন্দ-শিলাউর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সম্পাদক রব্বান মিয়া।
অভিযোগে বলা হয়, ১৪৩১-১৪৩৬ বঙ্গাব্দ মেয়াদে ৩১৭.৩৮ একর আয়তনের দুগাংগী বিল ইজারা প্রদানের জন্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে আবেদন আহবান করা হয়। এরপর গত ১৫ নভেম্বর অনলাইনে বিল ইজারা পাওয়ার আবেদন করেন তারা। এছাড়াও আরো দুটি মৎস্যজীবী সমিতি আবেদন করে। এরমধ্যে তাদের সমিতি সর্বোচ্চ ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা দর দেয়। দ্বিতীয় দর (১৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা) দেয় বার আউলিয়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড। ৩য় দরদাতা হচ্ছে ভাই ভাই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড। এই সমিতি ১১ লাখ ৯৪ হাজার টাকা দর দেয়। কিন্তু দরে দ্বিতীয় হওয়া বার আউলিয়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডকে ইজারার জন্যে মনোনীত করে ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়।
রব্বান মিয়া জানান- অনিয়মের মাধ্যমে বিল ইজারার বিষয়টি জানতে পেরে গত ৭ ডিসেম্বর প্রথমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এবং ১০ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে বার আউলিয়া সমিতির ইজারা বাতিলের আবেদন করেন তারা। কিন্তু তাদের আবেদন আমলে না নিয়ে ১২ ডিসেম্বর বার আউলিয়া সমিতির পক্ষে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। এতে ওই সমিতিকে জলমহালের তীরবর্তী বলে উল্লেখ করা হয়।
অথচ বিল দুগাংগী জলমহালের ৮৫ ভাগ এলাকা সুলতানপুর ইউনিয়নের হাবলাউচ্চ, বিরামপুর, সুলতানপুর, মহিউদ্দিনগর ও শাহপুর মৌজায় অবস্থিত। সেন্দ-শিলাউর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডও রামরাইল ও সুলতানপুর ইউনিয়নের মধ্যে অবস্থিত। অন্যদিকে বার আউলিয়া সমিতি শুধু রামরাইল ইউনিয়নের মধ্যে রয়েছে। সেই হিসেবে বিলটি সেন্দ-শিলাউর মৎস্যজীবী সমিতির সদস্যদের বাড়ির নিকটবর্তী ও তীরবর্তী। কিন্তু উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি তীরবর্তীতা সঠিকভাবে তদন্ত না করে বার আউলিয়া সমিতির পক্ষে পাতানো তদন্ত প্রতিবেদন দেয় বলে অভিযোগ করা হয়। বার আউলিয়া সমিতির ২৭ জন সদস্যের মধ্যে ৫ জন বিদেশ রয়েছেন। চারজন সদস্যপদ বাতিল করেছেন এবং একজন মারা গেছেন। সেকারণে তাদের আবেদন সরকারী জলমহাল নীতি-২০০৯ এর ৭(২) অনুচ্ছেদ অনুসারে সঠিক হয়নি বলেও অভিযোগ করা হয়।
সম্প্রতি এই সমিতির অডিট করে উপজেলা সমবায় অফিস। এ বিষয়ে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আজিজুল হক বলেন- অডিট অফিসার অডিট করে রিপোর্ট দিয়েছেন। বিদেশ বা মারা গেছে কিনা তা তদন্ত করে দেখলে বলা যাবে।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম শেখ বলেন, অতি নিকটবর্তী বলে বার আউলিয়া সমিতিকে বাছাই করা হয়েছে। নীতিমালা অনুসারে দিয়েছি। বেশি টাকা দিলে দেয়া যাবে তেমন নয়। কাছে যারা তাদের অগ্রাধিকার।