চোরদের থেকে রসের হাড়ি বাঁচাতে গাছে তালা

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫:০৮

রস সংগ্রহের জন্য কাটা হচ্ছে খেজুর গাছ। ছবি: শরীয়তপুর প্রতিনিধি
মানুষের মূল্যবান সম্পত্তি চোরদের হাত থেকে রক্ষা করতে ব্যবহার করা হয় তালা। তবে রস চুরি ঠেকাতে হাড়িতে তালা ব্যবহার করা হয় এমন বিষয় সত্যিই অবাক করার মতো। চোরেদের হাত থেকে রসের হাড়ি বাঁচাতে এমনই এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন শরীয়তপুরের এক গাছি। এদিকে এ ঘটনা জানাজানি হলে তালাবদ্ধ রসের হাড়ি দেখতে ভিড় জমানো শুরু করছেন এলাকার উৎসুক জনতা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গোসাইরহাট পৌরসভার মহিষকান্দি এলাকার হারুন সরদার (৫০)। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে শীত মৌসুমে খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করে তা দিয়ে গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। চলতি বছর তিনি ১৫০টি খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করে আসছেন।
আর এসব গাছ থেকে রস সংগ্রহের জন্য প্রয়োজন হয় মাটির হাড়ি। যার একেকটির মূল্য প্রায় ১০০ টাকা। তবে চলতি বছর প্রতি রাতেই এসব গাছ থেকে হাড়িসহ রস চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে চোরের দল। চোরেদের হাত থেকে রসের হাড়ি বাঁচাতে গাছের গোড়ায় বিভিন্ন গাছের কাটা আর কয়েকদিন রাত জেগে পাহারা দেওয়ার পরেও সুরাহা না মেলায় সিদ্ধান্ত নেন শিকল দিয়ে তালা লাগানোর বিষয়টি।
আবু তাহের নামের এক ব্যক্তি বলেন, এখন আর তেমন খেজুর গাছ দেখা যায় না। একটা সময় ছিল অল্প টাকায় খেজুর রস কিনে খাওয়া যেতো। খেজুর রসের দাম বেড়ে যাওয়ায় চোরেরা এখন খেজুর রস চুরি করে নিয়ে যায়। তবে খেজুর গাছে হাড়ির সঙ্গে শিকল দিয়ে তালাবদ্ধ করতে এই প্রথম দেখলাম। ওনার বুদ্ধি দেখে বিষয়টি খুব ভালো লাগলো।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, শীতের মধ্যে খুব পরিশ্রম করে হারুন ভাই গাছ কেটে রস সংগ্রহ করে থাকেন। এই আয় দিয়েই তার সংসার চলে। তবে কিছুদিন ধরে চোরেরা রস চুরি করার পাশাপাশি হাড়িও ভেঙে ফেলে। তার এই বুদ্ধিটি খুব ভালো লাগলো। এখন আর চোরেরা হাড়ি নিয়ে যেতে পারবে না।
গাছি হারুন সরদার বলেন, এই মৌসুমে এলে আমি রস বেঁচে সংসার চালাই। কিন্তু চোরেরা প্রতিরাতেই আমার হাড়িসহ রস চুরি করে নিয়ে যায়। এতে আমি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলাম। প্রতিদিন গাছ কাটার পর গাছের গোড়ায় কাটা দিয়ে রাখলেও সেটা সরিয়ে ফেলে রস নিয়ে যায় চোরেরা। পরে বাধ্য হয়ে চুরি ঠেকাতে বাজার থেকে শিকল আর তালা কিনে হাড়িতে দিয়ে রাখি।